দৈনন্দিন কর্মকান্ডে সহযোগিতা

এসএসসি(ভোকেশনাল) - পেশেন্ট কেয়ার টেকনিক-২ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | | NCTB BOOK
14
14

দৈনন্দিন জীবনের আর দশটি স্বাভাবিক কাজের মতই আমরা বিভিন্ন সময়ে বয়স্ক মানুষকে, কোনো কোনো সময় বাচ্চাদের অথবা আমাদের পরিবারের সদস্যদের নানারকম কাজে সহায়তা করে থাকি। যেমন, ওরাল হাইজিন, টয়লেটিং, ডায়াপার বদলানো, গ্রুমিং ও ড্রেসিং, গোসল করানো, সাধারণ গৃহস্থালীর কাজকর্মে সহায়তা এবং হালকা ব্যায়ামে সহযোগীতা ইত্যাদি। আর এভাবেই আমরা নানাবিধ সহযোগিতার মাধ্যমে সম্পাদন করে থাকি অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু দৈনন্দিন কর্মকান্ড। এই অধ্যায়ে দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু জ্ঞান ও দক্ষতা আলোচিত হয়েছে যা কেয়ারপিন্ডিং কর্মকান্ডে ক্যারিয়ার পড়তে তোমাদেরকে অনেক সহায়তা করবে।

এ অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা 

  • দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা কী তা বলতে পারবো।
  • পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য (OSH) বিধি সম্পর্কে বলতে পারবো।
  • রোগীর ওরাল হাইজিন বজার রাখার পদ্ধতিগুলো বর্ণনা করতে পারবো।
  • রোগীকে টয়লেটিং-এ সহযোগীতা করতে পারবো।
  • রোগীকে ডায়াপার বদলাতে সহযোগীতা করতে পারবো।
  • রোগীকে প্রুমিং ও ড্রেসিং-এ সহযোগীতা করতে পারবো।
  • রোগীকে গোসল করাতে পারবো।

৪.১. দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা - Activities of Daily Living (ADL) কি?

Activities of Daily Living (ADL) ৰা দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা হল সম্মিলিতভাবে বা নিজে যা নেয়ার জন্য যে প্রয়োজনীয় মৌলিক দক্ষতাগুলো প্রয়োগকে কুৱায়। যেমন খাওয়ানো, গোসল করানো, চলাফেরা করানো ইত্যাদি। এটা হলো একজন ব্যক্তির নিত্যদিনকার কাজকর্ম। ADL হচ্ছে একজন রোগী কতটা কার্যকরী অবস্থায় আছেন তা পরিমাপের একটা উপায়। দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্মগুলো একজন রোগী যখন করতে পারেন না তখন তাকে অন্যদের উপর অথবা যান্ত্রিক ডিভাইসের উপর নির্ভরশীল হতে হয়। রোগী যখন তার দৈনন্দিন জীবনযাত্রার প্রয়োজনীয় ক্রিয়াকলাপগুলো সম্পাদন করতে অক্ষম হয়ে পড়েন তখন তার জন্য তৈরি হয় একটি অনিরাপদ পরিস্থিতি যা তাদের জীবন মানের অবস্থা আরো খারাপ করে দেয়। একজন রোগীর জীবনে দৈনন্দিন কর্মকান্ডের সক্ষমতা থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যার উপরে ভিত্তি করেই উরু রোগীদের বিভিন্ন নার্সিং হোমে কিংবা হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। তাছাড়াও সেসব রোগীদের জন্য বিকল্প জীবন ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়ে পড়ে, অর্থের বিনিময়ে স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় বহন করতে হয়। অনেক সময় রোগীর দৈনন্দিন কর্মকান্ডের সক্ষমতা পর্যালোচনা করে তাদের চিকিৎসা কার্যক্রমের ফলাফল মূল্যায়ন করা হয়।

 

৪.২ ওরাল হাইজিন

স্বাস্থ্যসম্মত সুখগহবর ঊষা স্বাস্থ্যবান দাঁত হল শারীরিক এবং মানসিক সুখের এক পূর্বশর্ত। জনসমক্ষে কথা বলতে, হাসতে ব্যক্তিকে প্রতিবারই দাঁত প্রদর্শন করতে হয়। অস্বাস্থ্যকর মুখগহবরের কারণে শারীরিক অসুবিধা তো আছেই - এছাড়া মুখের বাজে গন্ধ অথবা দাঁত-মাড়ির শোচনীয় অবস্থা আমাদের আত্মবিশ্বাসকেও নড়বড়ে - করে দেয়। শক্ত সুগঠিত এবং স্বাস্থ্যকর মুখ ও দাঁতের সাহায্যে আমরা সঠিকভাবে খাদ্য চিবিয়ে খেতে পারি, কথা পরিষ্কারভাবে বলতে পারি এবং অবশ্যই মনোহুর হাসি হাসতে পারি। ওরাল হাইজিন বলতে সুখ-গহবরের ভেতর অবস্থিত দাঁত, মাড়ি এবং জিহ্বার সম্মিলিত সঠিক এবং বিজ্ঞান সম্মত পরিচর্যাকে বুঝায়। যেসকল রোগী তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে সুখ-গহবরের যত্ন নিতে পারেন না তারা সুখের ভিতরে দাঁতের ক্ষয় অথবা ক্যাভিটিসহ বিভিন্ন সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন।

মুখগহবর সঠিকভাবে পরিষ্কার না করার ফলে সৃষ্ট গ্রেক একসময় মাড়িতে জিঞ্জিভাইটিস নামক রোগের সৃষ্টি করে। এতে মাড়ি লাল হয়ে ফুলে যায় এবং প্রচন্ড ব্যথার সৃষ্টি করে ।

 

৪.২.১ মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা

মান সম্পন্ন মৌখিক যত্ন যে কোনো বয়সের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে, নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে বিশেষ মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি ও যত্নের প্রয়োজন, যেমন - বয়ঃবৃদ্ধ, শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু। ক্রমবর্ধমানহারে বর্তমানে পরিবারের সদস্যরা কেয়ারগিভার রাখতে আগ্রহী হচ্ছেন। তাই কেয়ারগিভারদের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি কর্মদক্ষতা হলো, গ্রাহকের মৌখিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে জানা। ওরাল হাইজিন সাধারণ স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার মানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রত্যেকের প্রতিদিন মুখের যত্ন নেওয়া দরকার।

একটি স্বাস্থ্যকর মুখ:

১। ভালো খাদ্যাভাস তৈরি করে: কারণ ব্যক্তি স্বাদ নিতে সক্ষম হয়।কামড়, চিবানো এবং ব্যথা বা । অস্বস্তি ছাড়াই খাবার গিলে ফেলতে পারে 

২। ওরাল ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। 

৩। রোগীদের নিজের সম্পর্কে ভালো বোধ করতে সহায়তা করে। 

৪। দুর্গন্ধযুক্ত নিঃশ্বাস প্রতিরোধ করে।

মুখ সুস্থ রাখার ফলে শরীর সুস্থ থাকে।মাইক্রো-অর্গানিজম (যেমন, ব্যাকটিরিয়া) থেকে মুখের সংক্রমণ রক্ত প্রবাহে বা শ্বাসযন্ত্রে প্রবেশ করে এবং চলাচল করতে পারে শরীরের অন্যান্য অংশে। এই অণুজীবের কারণে অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ার সম্ভাবনা থাকে, যেমন, হৃদরোগ, স্ট্রোক ও নিউমোনিয়ার মতো শ্বাসকষ্ট জনিত ব্যাধি এবং ফুসফুসের অন্যান্য রোগ।ডায়াবেটিস থাকলে রোগির মাড়ির সংক্রমণ জনিত রোগ আরও জটিল হতে পারে।

 

৪.২.২ মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যের দুর্বলতা বোঝার উপায় ও করণীয়

সঠিক পরিচর্যার অভাবের লক্ষণ :

১। দাঁতের ফাঁকে খাবারের অংশ বিশেষ 

২। দাঁতে গর্ত এবং মূল ক্ষয় 

৩। ওজন হ্রাস 

৪। দীর্ঘস্থায়ী দুর্গন্ধ 

৫। লাল, ফোলা বা কোমল মাড়ি, যেখান থেকে ব্রাশ বা ফ্লসিং করার সময় রক্তক্ষরণ হয় 

৬। কোনো আপাত কারণে দাঁত সংবেদনশীলতা 

৭। দাঁত অবস্থানচ্যুত হওয়া বা নড়া 

৮। মাড়ি এবং দাঁতের চারপাশে ফোলাভাব বা পুঁজ দেখা 

৯। দাঁতের ডেন্চার (আর্টিফিসিয়াল দাঁত বা ব্রেস) ঢিলা হয়ে যাওয়া

করণীয়:

মাড়ির রোগ এবং দাঁত থেকে মুখের সংক্রমণ রোধে সহায়তা করার জন্য ক্ষয়, প্লাক ব্যাকটিরিয়া (সাদা, চটচটে পদার্থ) যা প্রতিদিন পরিষ্কার করা আবশ্যক। যখন প্লাকটি জমতে জমতে শক্ত হয়ে যায়, তাকে ক্যালকুলাস বা টার্টার বলা হয়। গুরুতর অবস্থা হলে রোগীকে বা রোগীর অভিভাবককে সেই বিষয়ে অবগত করে এবং ডেন্টিস্টের শরনাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া উচিত। প্রয়োজনে কেয়ারগিভার রোগীকে ডেন্টিস্টের কাছে নিয়ে যাবে। 

 

৪.২.৩ মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কেয়ারগিভারের নিয়মিত কাজ

১। ফ্লোরাইড টুথপেস্ট ব্যবহার করে দিনে দু'বার দাঁত ব্রাশ করাতে হবে। 

২। প্রতিদিন ফ্লসের সাহায্যে দাঁতগুলোর মধ্যে পরিষ্কার করিয়ে দিতে হবে। 

৩। প্রতিটি খাবারের পরে ভালোমত কুলকুচি করানো বা গ্রাহক করতে না পারলে দাঁতের ফাঁকের ময়লা পরিষ্কার করে ধুয়ে দিতে হবে। 

৪। যদি ব্যক্তির মুখ ঘনঘন শুকিয়ে যায়, তবে অ্যালকোহল মুক্ত মাউথওয়াশে সাহায্য করতে পারে। বারেবারে অল্প অল্প পানি খাওয়া, কিউৰ চুষে খাওয়া (চিবানো নয়) এবং ঘুমানোর সময় কিউনিভিকায়ার ব্যবহার করা তাকে হাইড্রেটেড রাখতে সহায়তা করতে পারে। 

৫। বাহিরের খাবার এবং চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পানীয়, যেমন- ফল, শাকসবজি, শস্য দানা ও বিশুদ্ধ পানি মুখার এবং শরীরের জন্য ভালো। 

৬। প্রয়োজনে কেয়ারগিভার রোগীকে ডেন্টিস্টের কাছে নিয়ে যাবে।

 

৪.২.৪ মুখগহ্বরের যন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ

১। ম্যানুয়াল / ইলেক্ট্রিক টুথব্রাশ, ২। টুথপেষ্ট: ফুরাইটেড টুথপেস্ট, ৩। ডেন্টাল ফ্লস, ৪। মাউথ ওয়াশ, ৫। টুম পাউডার (প্রয়োজন হলে), ৬। পরিষ্কার পানি, ৭। টাওয়েল, ৮। টিস্যু, ৯। কুলকুচি পাত্র, ১০। আঙ্গুল টুথব্রাশ, ১১। জিহ্বা ক্লিনার ইত্যাদি।

 

৪.২.৫ সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত ব্রাশ ও জিহ্বা পরিষ্কার

ধাপ ১- দাঁত ব্রাশের মাথাটি দাঁতের বিপরিত দিকে রাখতে হবে, তারপরে মাড়ির সারির বিপরীতে ৪৫ ডিগ্রি কোলে বিস্টলের টিপসটি রেখে ছোট ছোট বৃত্তাকার গতিতে নড়াচড়া করে ব্রাশটি প্রতিটি দাঁতের সমস্ত পৃষ্ঠের উপরে কয়েকবার করে ঘুরাতে হবে। 

ধাপ ২-প্রতিটি দাঁতের বাইরের পৃষ্ঠতল ব্রাশ করে উপরের এবং নীচের অংশে ব্রাশ করে মাড়ির সারির বিপরীতে রাখতে হবে।

ধাপ ৩- সমস্ত দাঁতের অভ্যন্তরের পৃষ্ঠগুলোতে একই পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। 

ধাপ ৪-দাঁতের চাবানোর পৃষ্ঠগুলো ব্রাশ করতে হবে। 

ধাপ ৫-সামনের দাঁতগুলোর অভ্যন্তরের উপরিভাগ পরিষ্কার করার জন্য ব্রাশটি উল্লম্ব ভাবে কাজ করে এবং ফ্রান্সের সামনের অংশটি দিয়ে কয়েকটি ছোট বৃত্তাকার গতিতে নড়াচড়া করে ঘুরাতে হবে।

ধাপ ৬-জিহ্বা ব্রাশ করার ফলে শ্বাস সতেজ হবে এবং ব্যাকটিরিয়া অপসারণে সহায়তা করবে। এক্ষেত্রে টুথব্রাশ বা আলাদা জিহ্বা ক্লিনার ব্যবহার করা যেতে পারে। 

ধাপ ৭-এরপরে ভালোমত কুলকুচি করাতে হবে, তবে রোগী নিজ থেকে তা করতে না পারলে দাঁতের ফাঁকের ময়লা পরিষ্কার করে ধুয়ে দিতে হবে। 

ধাপ ৮-মুখমণ্ডল উষ্ণ পানি দিয়ে ভালোমত ধুয়ে বা মুছে দিতে হবে।

 

৪.২.৬ ডেন্টাল ফ্রসের ব্যবহার

১। ডেন্টাল ফ্লস প্রায় ১৮ থেকে ২৪ ইঞ্চি ছিড়ে নিয়ে ফ্লসটি সঠিকভাবে ধরে রাখতে হবে, বেশির ভাগ ফ্লসের অংশটি উভয় হাতের মধ্যম আঙুগলের চারদিকে পেচিয়ে রাখতে হবে। রোগীর দাঁতগুলোর জন্য প্রায় ১ থেকে ২ ইঞ্চি ব্রুস দুই আঙুলের মাঝ বরাবর রেখে দিতে হবে। 

২। এর পরে, বৃদ্ধাঙুল এবং তর্জনী আঙুল দিয়ে ফ্লসটাকে ধরে রাখতে হবে। 

৩। দুটি দাঁতের মাঝে ডেন্টাল ফ্লস রাখতে হবে। ধীরে ধীরে ফ্লস উপরে ও নীচে সরাতে হবে, প্রতিটি দাঁতের মধ্যে এমন করতে হবে। মাড়িতে ব্রুস লাগানো যাবে না। এটি মাড়িতে ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে।

৪। ফ্লসটি মাড়িতে পৌঁছে যাওয়ার সাথে সাথে দাঁতের গোড়ায় ফ্লসটি দিয়ে একটি সি আকার বক্ররেখা তৈরি করতে হবে। এটি ফ্লসকে মাড়ি এবং দাঁতের মধ্যস্থানে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। 

৫। খাগগুলো পুনরাবৃত্তি করতে হবে। প্রতিটি দাঁতে ফ্লসটির একটি নতুন, পরিষ্কার অংশ ব্যবহার করতে হবে।

 

৪.৩ রোগীকে টয়লেটিং-এ সহযোগীতা করা।

স্বাস্থ্যকর্মীরা সাধারণত যেসব রোগীর যত্ন নেয় সেসব রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের টয়লেট ব্যবহারে কিছু সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে। সে কারণে কেয়ারগিভারগণ রোগীদের নিরাপদে টয়লেট ব্যবহারে সাহায্য করতে পারে এবং এর জন্য অনেক উপায়ই রয়েছে। এটি স্বাচ্ছন্দ্যের সহিত সম্পন্ন করতে অন্য লোকেরও সহযোগীতা নেয়া যেতে পারে।

৪.৩.১ টয়লেটিং এর জন্য সহযোগীতার প্রয়োজন হয় কেন?

একজন রোগীর টয়লেটিং-এর জন্য সাহায্য প্রয়োজন হয় তখন- 

১। যখন প্রবীণদের পায়খানা করতে সমস্যা হয় । 

২। রোগীর আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে । 

৩। রোগী ভীষণ অসুস্থতায় থাকলে।

৪। রোগীর জ্ঞান হ্রাস পেলে। 

৫। অনিয়ন্ত্ৰিত প্ৰসাৰ বা পায়খানা করার কারণে যদি তাদের পোশাক ও চারপাশের আসবাবপ ভিজে যায়। 

৬। রোগীর বসা থেকে উঠতে অসুবিধা হলে। 

৭। রোগীর হাঁটা, ভারসাম্য এবং চলাফেরায় অসুবিধা থাকলে। 

৮। রোগীর ঘরে প্রস্রাব বা মলত্যাগের কারণে যদি গন্ধ বা দাগ পড়ে।

ইনকন্টিনেন্স: ইনকন্টিনেন্স সমস্যাটি প্রায়শই ঘটে। এমন একটা সমস্যা যেটি পেশী এবং রামুর সমস্যার কারণে ঘটে যা মুত্রাশয়কে প্রস্রাব ধরে রাখতে বা ছেড়ে দিতে সহায়তা করে। এ অবস্থায় কাশি বা হাঁটির সময় প্রস্রাব বের হতে পারে। অথবা রোগীর হঠাৎ প্রসাবের চাপ হতে পারে কিছু সময়মত বশিরুমে যেতে পারেন না। এটিই হল ইনকন্টিনেন্স।

 

৪.৩.২ সাহায্যকারী টয়লেটের প্রকারভেদ

১। টয়লেট / কমোড, ২। বেডপ্যাল / ইউরিনাল, ৩। অপসারণযোগ্য টয়লেট সিট অথবা পোর্টেবল টয়লেট ও কমোড, ৪। হ্যাজাইল এ্যাডজাস্টেবল টয়লেট কমোড

 

৪.৩.৩ টয়লেট বা কমোড ব্যবহার করতে সাহায্য করা

একজন স্বাস্থ্যকর্মী যখন কারো যত্ন নেন, তখন রোগী যদি বিছানা থেকে উঠতে পারে তাহলে টয়লেট বা কমোড ব্যবহার করা হয়। তবে সেক্ষেত্রেও সেবাকর্মীর কাছ থেকে তার কিছু সহযোগীতার প্রয়োজন হতে পারে। পদ্ধতিগুলো নিম্নরূপ:

১। রোগী কীভাবে দাঁড়াতে এবং নিরাপদে হাঁটতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন সে ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে। 

২। যদি রোগী কমোড ব্যবহার করে, তাহলে তাদের জিজ্ঞাসা করতে হবে যে, তিনি এটি কোথায় রাখতে চান। 

৩। যদি তিনি টয়লেট বা কমোডে বসতে চান, তাহলে তাদের রেলিং এর মতো নিরাপদ কিছু ধরে বসতে বলতে হবে। 

৪। তখন তাদের কাপড় সরাতে সাহায্য করতে হতে পারে। 

৫। টয়লেট বা কমোড ব্যবহার করার সময় তাদের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে।

৬। প্রয়োজনবোধে তাদের থেকে দূরে সরে যেতে হবে। সাহয্যকারী যদি রুম ছেড়ে যায়, তখন তাদের প্রয়োজন হলে কাছাকাছি থাকতে হবে। টয়লেটের কাজ শেষ হলে পুনরায় সেবাদানকারীর সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তা জানাতে বলতে হবে।

 

এই সময় তাদেরকে:

১। পরিষ্কার করার জন্য টয়লেট পেপার বা ভেজা ওয়াইপস দেওয়া লাগতে পারে। 

২। তাদের দাঁড়াতে সাহায্য করা লাগতে পারে। 

৩। তাদের জামাকাপড়ঠিক করা বা বোতাম লাগাতে সাহায্য করা লাগতে পারে। 

৪। টয়লেট পেপার বা ভেজা ওয়াইপস দিয়ে যদি নিজে পরিষ্কার হতে না পারে তাহলে পরিষ্কার কাপড় দেওয়া লাগতে পারে। 

৫। তাদের হাত ধুয়ে পরিষ্কার করতে সাহায্য করা লাগতে পারে। 

৬। মলদ্বার থেকে মুত্রনালীতে (শরীরের যে অংশে প্রস্রাব বের হয়) জীবাণু ছড়ানোর কারণে ইউরিন ইনফেকশন হতে পারে। জীবাণু ছড়ানো এবং সংক্রমণের কারণ রোধ করতে সামনে থেকে পিছনে মুখতে হবে। 

৭। টয়লেটে ভেজা ওয়াইপস বা অন্যান্য পণ্য ফ্লাশ করা যাবে না। কাজ শেষ হয়ে গেলে এগুলোকে একটি প্লান্টিকের ব্যাগে রাখতে হবে অর্থাৎ এগুলো সরাসরি একটি নির্ধারিত বর্জ্য ধারকে রাখতে হবে।

 

৪.৩.৪ টয়লেট ব্যবহারকে সহজ করা

নিম্নলিখিত বিষয়গুলো রোগীর টয়লেট ব্যবহারকে সহজ করতে পারে:

১। রোগীকে প্রচুর সময় দিতে হবে, যাতে সে ভাড়াহুড়া না করেন। 

২। তাদের রুটিন মাফিক অথবা রুটিনের কাছাকাছি একটা সময়ে টয়লেটিং এর ব্যবস্থা করে দিলে। 

৩। টয়লেটটি যদি অনেক দূরে হয় তাহলে মাঝ পথে একটি চেয়ার রাখতে হবে, যাতে রোগী সেখানে বিশ্রাম নিতে পারে। 

৪। টয়লেটে আসা -যাওয়ার মেঝে পরিষ্কার ও পিচ্ছিলমুক্ত রাখতে হবে যাতে রোগী পা পিছলে পড়ে না যায়। 

৫। রাতে নিরাপদে টয়লেটে পৌঁছাতে একটি আলো জাগিয়ে রাখতে হবে। 

৬। যদি রোগী তাদের বাথরুমের প্রয়োজনের কথা বলতে না পারে তা হলে কোনো সংকেত অথবা ছবির মাধ্যমে প্রকাশ করার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

 

৪.৩.৫ বেডপ্যান ইউরিনাল কি?

বেডপ্যান এবং ইউরিনাল হল এমন ডিভাইস যা মানুষকে মলত্যাগ করতে বা বিছানার থাকা অবস্থায় প্রস্রাব করতে দেওয়া হয়। সাধারণত ব্যক্তি মলত্যাগের জন্য একটি বেডপ্যান ব্যবহার করেন কিন্তু প্রস্রাব করার সময় একটি ইউরিনাল ব্যবহার করেন। মহিলারা সাধারণত মলত্যাগ এবং প্রস্রাবের জন্য বিছানার প্যান/ বেড প্যান ব্যবহার করে থাকেন।

 

 

৪.৩.৬ একজন ব্যক্তিকে বেডপ্যান ব্যবহার করতে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুতি

যে সকল উপকরণ সংগ্রহ করতে হবে: 

১। বেসিনে উষ্ণ গরম পানি 

২। ডিম্পক্ষেবল গ্লাভস 

৩। টয়লেট পেপার 

৪। তোয়ালে 

৫। পরিষ্কার কাপড় বা ভিজা ওয়াইপস

প্রস্তুতিঃ

১। বেডপ্যানের উপর গরম পানি ঢেলে এটি শুকিয়ে নিতে হবে। একটি ধাতব বেডপ্যান ভাপ ধরে রাখে, তাই এটি ব্যক্তিকে দেওয়ার আগে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে যে, এটি খুব গরম নয়। 

২। বেডপ্যানের উপরের প্রান্তে বেবি পাউডার ছিটিয়ে দিতে হবে, যাতে ব্যক্তির নীচে সহজে স্লাইড করা যায়।

 

৪.৩.৭ রোগীকে ডায়াপার বদলাতে সহযোগীতা করা 

ডায়াগার হচ্ছে একটি শোষণকারী উপাদান যা দু'টি পায়ের মধ্যে টেনে কোমরের চারগালে বেঁধে দেওয়া হয়। ডায়াপার শব্দটি সাধারণত শিশুদের জন্য প্রযোজ্য যারা এখনও টয়লেট প্রশিক্ষণ পায়নি। তবে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য তায়ালার তৈরি করা হচ্ছে বেশ কিছু টয়লেটিং সমস্যা সমাধানের জন্য। যেটিকে মেডিকেলের ভাষায় ডায়াপারের পরিবর্তে এডাল্ট ন্যাপি বলা হয়। বয়স্কদের ভায়াপার বা এডাল্ট ন্যাপি সাধারণত শিশুদের সাইজের চেয়ে বড় আকারে তৈরি হয়। বয়স্কদের বিভিন্ন সমস্যার জন্য ডায়াপার ব্যবহার করা হয়। যেমন: ইনকন্টিনেন্স, চলাচলে অক্ষম ব্যক্তি, ভারী ডায়েরিয়া আক্রান্ত, ডিমেনশিয়া ইত্যাদি। 

 

৪.৩.৮ প্রাপ্ত বয়স্কদের তারাপারের প্রকারভেদ

সমস্যাভেদে বয়স্কদের ডায়াপারের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। যেমন :

১। লাইট রাডার লিকেজ প্যাডস (Light Bladder Leakage Pads ) 

২। এ্যাডাস্ট ব্রিফস (Adult Briefs) 

৩। এ্যাডান্ট পুল-আপস/ প্রটেক্টিভ আন্ডার ওয়্যার (Adult Pull-upa Underwear) / Protective 

৪। ডিম্পোজেবল এ্যাডাল্ট ডায়াপারস (Disposable Adult Diapers ) 

৫। রিইউজেবল এ্যাডাল্ট ডায়াপারস (Reusable Adult Diapers ) 

৬। সুইম ডায়াপারস (Swim Diapers ) 

৭। ইনকন্টিন্যান্স ভারাপারস ফর মেন (Incontinence Dalpers for Men ) 

৮। ফিকাল ইনকন্টিন্যান্স ডায়াপারস (Fecal Incontinence Daipcs)

 

 

৪.৩.৯ বাচ্চাদের ডায়াপারের প্রকারভেদ 

শিশুদের উপযোগী তিন প্রকারের ডায়াপার রয়েছে। পরিবেশ অনুযায়ি এই ডায়াপারগুলো নির্বাচন করা হয়ে থাকে। সেগুলো হলো: 

১। ডিসপোজেবল ডায়াপারস, ২। কাপড়ের ডায়াগার এবং ৩। ফ্লাশেবল ডায়াপার।

 

৪.৩.১০ বাচ্চাকে ডায়াপার পড়ানো এবং তাকে পরিচ্ছন্ন রাখা

বাচ্চাদের ডায়াপার পরানো খুবই সচরাচর আর সাধারণ একটি ব্যাপার। এটি কর্মজীবী মায়ের সময় যেমন বাচায় তেমনই ৰাড়িঘর বা কাপড় নোংরা করা থেকেও মুক্তি দেয়। কিন্তু প্রায়ই বাচ্চাদের যে সমস্যাটা দেখা দেয় সেটা হচ্ছে ডায়াপার র‍্যাশ। এই র‍্যাশ বাচ্চার জন্য অস্বস্তিকর ও কষ্টদায়ক। প্রথমদিকে ডায়াপার পরানো বা পরিবর্তন করা একটু কঠিন লাগতে পারে কিন্তু ধীরে ধীরে একেবারে সহজ হয়ে যায়। ডায়াপার পরাতে কিছু বিষয়ের দিকে নজর রাখতে হয়। অথবা বাচ্চাদের যারা দেখা শোনা করে তাদের এই ব্যাপারে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল ভালো মানের ডায়াপার পছন্দ করা। সম্ভা এবং নিম্ন মানের ডায়ালার বাচ্চার জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। ডায়াপার বেছে নেবার সময় তার শোষণক্ষমতা, আরামদায়ক কিনা, এবং লিকপ্রুফ কিনা তা দেখে নিতে হয় ।

৪.৩.১১ ডায়াপার পরানোর সময় করণীয় 

১। ডায়াপার বেশি আঁটসাঁট করে পড়ানো যাবে না, তাহলে শিশুরা খুব অস্বস্তিতে থাকবে। 

২। ৬ ঘন্টার মধ্যেই পরিবর্তন করে দিতে হবে যেদি পায়খানা করে তাহলে সাথে সাথেই পরিবর্তন করতে হবে)। 

৩। বাচ্চার মল যত দ্রুত সম্ভব পরিষ্কার করতে হবে। 

৪। ডায়াপার পরিবর্তন করার সময় যদি কোন র‍্যাশ দেখা যায় তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেখানে এন্টিসেপ্টিক বা ডায়াপার ক্রিম ব্যবহার করতে হবে এবং কিছু সময় ডায়াপার না পড়িয়ে রাখতে হবে।

 

৪.৩.১২ শিশুকে পরিচ্ছন্ন করার উপায়

১। ডায়াপার বদলানোর সময় শিশুকে খুব যত্ন করে পরিষ্কার করতে হবে। এর জন্য ভেজা কাপড়, তুলার তৈরীর বল অথবা বেবি ওয়াইপস ব্যবহার করা যেতে পারে যা দিয়ে শিশুর নিম্নদেশ পরিষ্কার করা যায় । 

২। শিশুকে সবসময় সামনে থেকে পেছনদিকে মোছাতে হয় (কখনই পেছন থেকে সামনের দিকে মোহানো যাবে না বিশেষ করে কন্যা শিশুর ক্ষেত্রে, অন্যথায় ব্যকটেরিয়া সংক্রমন হতে পারে যা ইউরিনারি ইনফেকশন ঘটাতে পারে) 

৩। শিশুর পায়ের গোড়ালি ধরে উপরে দিকটি ভালো করে পরিষ্কার করে দিতে হবে। 

৪। তার হাটু এবং নিতম্বের ভাঁজ গুলোও পরিষ্কার করতে হবে।

৫। শিশুকে মোছানো শেষ হলে তার শরীর পরিষ্কার কাপড় দিয়ে শুকিয়ে ডায়াপার অয়েন্টমেন্ট অথবা ময়েশ্চারাইজিং বেবি লোশন ব্যবহার করতে হবে।

 

৪.৩.১৩ ডায়াপার পড়ানোর সময় অবশ্যই করণীয়

১। ময়লা ভায়গার শুধু দুর্গন্ধযুক্তই নয় বরঞ্চ অনেক ধরনের জীবাণুরও সংক্রমণ ঘটাতে পারে। তাই ময়না ডায়পার নিয়মিত ফেলে দিতে হবে অন্তত দিনে একবার। 

২। শক্ত ডায়াপার পড়ালে অনেক সময় শিশুর পায়ের ও কোমরের আশেপাশে দাগ হয়ে যেতে পারে তাই ঢিলেঢালা ডায়পার পড়ালে শিশুরা আরাম পায়। 

৩। শিশুর ডায়াগার পরানোর জায়গায় পায়ে ও কোমরে যদি ফুসকুড়ি দেখা যায় তাহলে কিছুদিন ডায়াগার ব্যবহার করা বন্ধ রাখতে হবে। 

৪। শিশুর নাভির নাড়ীটি যদি এখনও পরে না দিয়ে থাকে তাহলে সেই স্থানটি শুকনো রাখতে ডায়াপারের কোমরের কাছের অংশটি ভার্জ করে নিতে হবে।

৫। ছেলে শিশুকে ডায়াপার পরানোর সময় ডায়াপারটি আটকাবার আগে শিশুর লিঙ্গটি নিচের দিক করে বসাতে হবে। এটি তরলজাতীয় কিছু গড়িয়ে কোমরের উপরিভাগের দিকে আসতে ৰাধা দেবে। 

৬। জীবাণু যাতে হুড়াতে না পারে সেজন্য শিশুর ডায়পার বদলাবার পর ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হৰে ।

 

৪.৪ রোগীকে সাজসজ্জা ও পোষাক পরিধান (গুনিং ও ড্রেসিং) করতে সহযোগীতা করা। 

একজন অসুস্থ্য বুদ্ধ রোগী তার দৈনন্দিন জীবনের অনেক কাজই নিজ থেকে করতে পারেন না যেমন, নখ কাটা, সেভ করা, জুতা পড়া, চুল আচরানো ইত্যাদি। নিজ থেকে পোষাক পরিধান ও সঠিক ফেক্স চরনেও তারা অনেক সমস্যায় পড়ে থাকেন। তখন এসব কাজগুলো সঠিকভাবে করার জন্য নির্বিড় সহযোগীতার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এই অধ্যায়ে আমরা এইসব বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। 

৪.৪.১ পোশাক নির্বাচন 

১। পছন্দ সহজীকরণ করতে হবে। আলমারী অতিরিক্ত পোশাক মুক্ত রাখতে হবে কারণ অতিরিক্ত পোশাক থেকে পছন্দ করার সময় ব্যক্তি অনেকসময় উত্তেজিত ও বিভ্রান্ত হতে পারে। 

২। আরামদায়ক (সুতি বা লিনেন) এবং সাধারণ পোশাক চয়ন করতে হবে। পুলওভার টপসের চেয়ে সামনে থাকা বোতাসসহ কার্ডিগানস, শার্ট এবং ব্লাউজ পরানো সহজ। বোতাম, ফ্যান বা জিপার্সের জন্য ভেলক্রো বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। 

৩। নিশ্চিত করতে হবে, যে পোশাকগুলো ঢিলা-ঢালা ও আরামদায়ক, বিশেষত কোমর ও পশ্চাৎদেশে। কোমল এবং প্রসারিত হয় এমন কাপড়গুলো চরন করতে হবে। 

৪। আরামদায়ক জুতা চয়ন করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে যে, ব্যক্তির ঐ জুতা পড়ে যেন পিছলে না যায়। বাহিরে যাওয়ার জন্য লোফার বা ভেলক্রোসহ জুতা চয়ন করা নিরাপদ। 

৫। নমনীয় হয়ে বুঝতে হবে, যদি ব্যক্তি একই পোশাক বারবার পরতে চান, তবে অনুরুপ গোলাক করেকটি কিনে চিহ্নিত করে রাখতে হবে যেন পরিষ্কার করার সময় বিভ্রান্ত হতে না হয়।

 

৪.৪.২ পোশাক পরিধান করিয়ে দিতে করণীয় 

১। প্রতিটি পোশাকের ধরন অনুযায়ী আলাদা করতে হবে। যেমন অন্তবাস প্রথমে, পরে প্যান্ট, পরে একটি শার্ট এবং তারপরে একটি সোয়েটার। 

২।যদি সম্ভব হয়, তবে ব্যক্তিকে পছন্দসই পোশাক বা রঙ নির্বাচন করার সুযোগ দিতে হবে, তবে ব্যাপারটি সহজতর করার জন্য দুটি বিকল্প পছন্দ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। 

৩। সরল ও সরাসরি নির্দেশনা দিতে হবে। সম্ভব হলে নিজে নিজের পোশাক পরতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। একটি একটি করে পোশাক এগিয়ে দিয়ে তার নির্দেশনা স্পষ্ট করে বলতে হবে। 

৪। আবহাওয়া অনুযায়ী যথাযথ পোশাক পরিধানে ব্যক্তিকে উৎসাহিত করতে হবে। 

৫। ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে।

পরিধানরত পোশাক অপসারণের কৌশল

১। রোগীর যদি বাহু বা কাঁধে আঘাতপ্রাপ্ত হন, তবে আঘাতহীন দিক থেকে জামা খুলতে শুরু করতে হবে।

২। জামা খুলতে, বোতম/জিপার/ভেলক্রো খুলে জামাটি পিছন দিকে নীচে থেকে উপরের দিকে নিয়ে আসতে হবে। কাঁধটি সামান্য উঁচু করে ধরে হাতা খুলে ফেলতে হবে। অপর পাশের হাতা তারপর এক টান দিয়ে খোলা যাবে। 

৩। প্যান্ট খুলার জন্য, কোমরের কাছে আলগা করে বোতাম বা চেইন থাকলে খুলে ফেলতে হবে। প্যান্টটি কোমরের অংশটি ধরে নীচের দিকে টেনে খুলে দিতে হবে।

পোশাক পরানোর কৌশল

১। রোগী যদি বাহু বা কাঁধে আঘাতপ্রাপ্ত হন, তবে আঘাতপ্রাপ্ত দিক থেকে জামা পরাতে শুরু করতে হবে। সেবাদানকারীর হাতটি জামার হাতার মধ্য দিয়ে নিয়ে তার হাতটি ধরে ভেতরে ঢুকাতে সাহায্য করতে হবে।অপর হাতটি ধরে সহজেই পরিয়ে দেওয়া যাবে। 

২। প্যান্ট পরানোর জন্য, সেবাদানকারীর হাতটি প্যান্টের পায়ের অংশের ভেতর দিয়ে কোমর পর্যন্ত নিয়ে রোগীর পা ধরে ভেতর দিকে নিয়ে আস্তে হবে। তার প্যান্টটি কোমর পর্যন্ত টেনে তুলে বোতাম/জিপার/ভেলক্রো/ ফিতা লাগিয়ে দিতে হবে।

 

৪.৪.৩ প্রয়োজনীয় সাজসজ্জা (গ্রুমিং)-এর প্রথমিক পরিকল্পনা

শারীরিক বা মানসিক ভাবে অসুস্থ বা বয়সজনিত কারণে শারীরিক ক্রিয়াকলাপের নিয়ন্ত্রণ হারানো কোনো ব্যক্তির চুল কীভাবে আঁচড়াতে হয়, নখ কাটতে হয় বা শেভ করতে হয় তা ভুলে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে কিছু প্রাথমিক পরিকল্পনা প্রয়োজন। যেমন:

১। সাজসজ্জার রুটিনগুলো গ্রাহকের পরিবারের সাথে কথা বলে বা সম্ভব হলে গ্রাহকের সাথে কথা বলে জেনে  নিতে হবে। 

২। পরিবারের সাথে কথা বলে বা সম্ভব হলে গ্রাহকের সাথে কথা বলে তার প্রিয় প্রসাধনী সামগ্রীর ব্যাপারেও জেনে নিতে হবে এবং সেগুলোই ব্যবহার করতে হবে। 

৩। ব্যক্তির পাশাপাশি সেবাদানকারী তার নিজের সাজসজ্জার কাজগুলো সম্পাদন করে নিতে পারে। যেমন- নিজের চুল আঁচড়ানো। 

৪। বিপদমুক্ত ও সহজতর সাজসজ্জার সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে। যেমন- বৈদ্যুতিক শেভার, রেজারের চেয়ে কম ঝুঁকিযুক্ত হতে পারে ।

 

৪.৪.৪ মুখমণ্ডলের যত্ন 

মুখমণ্ডল ধৌতকরণ

১। একটি অ্যালকোহলমুক্ত মৃদু ক্লিনজার/ ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। 

২। মুখমণ্ডল হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে ক্লিনজার/ফেসওয়াশ প্রয়োগ করতে আঙ্গুল ব্যবহার করতে হবে। 

৩। ক্লিনজার/ফেসওয়াশ প্রয়োগের ক্ষেত্রে নিন্মোক্ত নির্দেশনা অবলম্বন করতে হবে:

ক। ত্বক স্ক্রাব করা থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ স্ক্রাবিং ত্বককে অতিরিক্ত শুষ্ক করে। 

খ। হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে স্পঞ্জ করে মুছে একটি নরম তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে শুকনো করে মুছে ফেলতে হবে। 

গ। ত্বক শুষ্ক বা ত্বকে চুলকানি হলে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে দিতে হবে। 

ঘ।দিনে দুইবার (সকালে একবার এবং রাতে একবার) এবং অতিরিক্ত ঘামের পরে মুখমণ্ডল ধৌতকরণ সীমাবদ্ধ করতে হবে। বিশেষত যখন টুপি বা হেলমেট পরার ফলে ত্বক জ্বালা করে। অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার পরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ত্বক ধুয়ে দিতে হবে।

 

৪.৪.৫ পুরুষদের ক্ষেত্রে মূর্খমণ্ডলে শেভিং 

প্রস্তুতিঃ 

১। রোগী বাসায় শেডিং করতে ইচ্ছুক না হলে, সেলুনে করতে ইচ্ছুক কিনা তা জেনে নিতে হবে। 

২। প্রথমে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, ঘরে যথেষ্ট পরিমাণে আলো আছে যাতে দু'জনকেই ভালোভাৰে দেখতে পারা যায়। ব্যক্তিকে তার প্রয়োজন অনুসারে চেয়ারে বসতে বা বিছানায় বসতে সাহায্য করত হবে। তবে রোগী যদি শয্যাশায়ী হন, তবে শুয়ে থাকা অবস্থায় শেভিং করতে হবে। 

৩। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে হবে। যেমন- একটি আয়না, একটি রেজার বা বৈদ্যুতিক শেভার, শেভিং ক্রিম, একটি পরিষ্কার তোয়ালে এবং গরম পানির একটি পাত্র।

শেভিং প্রক্রিয়া:

১। শুরু করার আগে, ব্যক্তির চিবুকের নীচে একটি তোয়ালে রেখে পানির ফোঁটাগুলো আটকাতে হবে। দাঁড়ি নরম করতে হালকা গরম পানিতে তোয়ালে বা স্পঞ্জ ভিজিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। 

২। শেভিং ক্রিম প্রয়োগ করতে হবে। 

৩। একটি ভালো রেজার ব্যবহার করতে হবে, যেন রেজার দ্বারা কেটে যাওয়ার গুরুতর ঝুঁকি এড়ানো যায় । 

৪। দাঁড়ির বৃদ্ধি যেদিকে সেদিক বরাবর লেভ করতে হবে। 

৫। প্রবীণদের ত্বক পাতলা এবং খুব সংবেদনশীল। তাই সংক্ষিপ্ত এবং ধীর গতির স্ট্রোক ব্যবহার করতে হবে। সর্বদা ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করতে হবে, “আপনার কেমন লাগছে?” বা “আপনার কি কোনো অসুবিধা হচ্ছে?"। 

৬। অ্যাডামস্ আপেল, মুখ, নাক এবং চিবুকের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। 

৭। ২-৩ টি স্ট্রোকের পরে প্রতিবার রেজারের ফলকটি ধুয়ে ফেলতে হবে। 

৮। অবশিষ্ট শেডিং ক্রিম সরানোর জন্য একটি উষ্ণ ভেজা কাপড় ব্যবহার করতে হবে। পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ত্বক শুকিয়ে নিতে হবে। 

৯। যদি তিনি আফটার শেভ লোশন ব্যবহারে অভ্যস্ত হন, তবে প্রাকৃতিক আফটার শেভ লোশন ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে।

 

৪.৪.৬ চুলের যত্ন 

১। রোগী চুল ৰাসায় কাটাতে ইচ্ছুক না সেলুনে, তা জেনে নিতে হবে। বাসায় কাটাতে ইচ্ছুক হলে চুল কাটে এমন ব্যক্তিকে বাসায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে। 

২। চুল ছোট এবং একটি সহজ স্টাইলে রাখতে হবে। গ্রাহকের ব্যক্তিগত পছন্দের সম্মান দিতে হবে। 

৩। বাথটাব বা ঝরণায় খুব অসুবিধা হলে, রান্নাঘরের সিঙ্কে বা বাথরুমের বেসিনে চুল ধুয়ে দিতে হবে। 

৪। চুল ধোঁয়া অসম্ভব হলে ওষুধের দোকানে পাওয়া যায়, এমন একটি শুকনো শ্যাম্পু ব্যবহার করার কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। 

৫। যদি ব্যক্তি শয্যাশায়ী হন, তবে চুল অবলাই বিছানায় ধুতে হবে। একটি বড় প্লাস্টিকের শিট বালিশের উপর রেখে ব্যক্তিকে পুঁইরে ব্যক্তির ঘাড়ের নিচে একটি তোয়ালে ভাঁজ করে স্থাপন করতে হবে। প্লাস্টিকের শিটের অপর প্রান্ত একটি বালতিতে রাখতে হবে। 

৬। ব্যক্তির ব্যক্তিগত চিরুনি ব্যবহার করতে হবে। চিরুনি নিয়মিত ছোট ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। ধারালো দাঁতযুক্ত চিরুনি স্কাল্পে আঘাত করতে পারে। একটি হালকা স্পর্শের চিরুনি ব্যবহার করে ব্যক্তিকে নিজের চুল নিজে আঁচড়াতে উৎসাহিত করতে হবে।

৪.৪.৭ চোখের যত্ন  

১। পরিষ্কার হালকা গরম পানিতে পাতলা ছোট রুমাল ভিজিয়ে চোখের পরিধি (চোখের চারপাশের বৃত্তাকার অঞ্চল) ভালোভাবে মুছে দিতে হবে। 

২। জ্বালাপোড়া এড়ানোর উদ্দেশ্যে এই অঞ্চলে সাবান ব্যবহার না করাই ভালো। চোখের ভিতরের কোণা থেকে বাইরের কোণার দিকে হাতের রুমালটি পরিচালিত করতে হবে। 

৩। পরিষ্কার করার সময় প্রতিটি চোখের ক্ষেত্রে রুমালের ভিন্ন অংশ ব্যবহার করতে হবে কারণ এটি সংক্রমণের বিস্তার রোধ করতে সহায়তা করে। 

৪। চোখের মার্জিনের স্যাঁতসেঁতে ময়লা আলগা করতে তুলার বল ব্যবহার করতে হবে। 

৫। চোখের বলের উপরে কখনও সরাসরি চাপ প্রয়োগ করা যাবে না। চোখ থেকে নয়লা সাবধানে অপসারণ করা উচিত এবং যতবার প্রয়োজন চোখ পরিষ্কার করা উচিত। 

৬। অনেক রোগী চশমা পরেন। চশমাগুলো বিছানার পাশে ড্রয়ারে রাখা উচিত। ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই চশমা কোথায় রেখেছেন ভুলে যান, তাই সর্বদা তাদের চশমা একই জায়গায় রাখতে হবে। 

৭। চশমা পরিষ্কার করার সময় যত্নবান হতে হবে যেন চশমা ভেঙ্গে না যায়। উষ্ণ পানি এবং একটি নরম শুকনো কাপড় দিয়ে চশমা পরিষ্কার করে নিতে হবে।

 

8.8.৮ কানের যত্ন 

১। কানের মধ্যে পরিষ্কার করার জন্য একটি রুমালের পরিষ্কার কোণ ঢুকিয়ে আস্তে আস্তে ঘুড়াতে হবে। এছাড়াও, কান পরিষ্কার করার জন্য একটি কটন-বাটও দরকারী। 

২। যদি রোগী শ্রবণ যন্ত্র ব্যবহার করে থাকেন, তা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ব্যাটারির যত্ন এবং সঠিক সন্নিবেশ কৌশল এই যন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত। 

৩। শ্রবণশক্তি হ্রাস হল বয়স্কদের একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। পরিবেশে সঠিকভাবে যোগাযোগ এবং প্রতিক্রিয়া জানাতে রোগী সক্ষম কিনা সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে।

৪.৪.৯ পায়ের যত্ন 

নখ কাটায় সহায়তা করার জন্য নিয়মিত রুটিন ঠিক করতে হবে। নখের ধার কমানোর জন্য নেইল ফাইলার ব্যবহার করতে হবে। কোথাও কোনো ফোলা সাল বা ডিসকোলেশন আছে কিনা তা খেয়াল করতে হবে।

৪.৫ -রোগীকে গোসল করাতে সহযোগীতা করা

বক্ষ কিংবা বাচ্চারা নিজে নিজে গোসল করতে পারেনা। নিয়মিত গোসলের অভাবে রোগীর ত্বকে বিভিন্ন রকমের চর্মরোগ দেখা দেয়। শরীরে দুর্গন্ধের তৈরি হয়। মেজাজ খিটখিটে লাগে। এমনকি খাবারেও অরুচির তৈরি হয়। ঘুমের ব্যঘাত ঘটে। যার ফলে ক্লান্তি ও অবসাদ থেকে বসে। তাই রোগীকে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে গোসল করানো একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ কাজ। নিচে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করব ।

৪.৫.১ বয়স ও প্রয়োজন অনুযায়ী গ্রাহকের গোসলের পদ্ধতি 

ব্যক্তির কতটা সহায়তা ও তদারকি প্রয়োজন, তার গোসলের রুটিন, তার জন্য পছন্দনীয় বা উপযুক্ত গোসলের পদ্ধতি সম্পর্কে, ব্যক্তি ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে এবং তার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের ফাইল দেখে জেনে নিয়ে কাজ করতে হবে।

 

৪.৫.২ শাওয়ার বাথ/টাব বাথ (সম্পূৰ্ণ গোসল) 

গোসলের পূর্ব প্রস্তুতি

১। পুরুষ রোগীকে পুরুষ কেয়ারপিতারদের দ্বারা গোসল করিয়ে দেওয়া উচিত। 

২। মহিলা রোগীকে মহিলা কেয়ারপিভারদের দ্বারা গোসল করিয়ে দেওয়া উচিত। 

৩। ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে।

৪। দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলতে, স্থান বদলানোর সময় একাধিক ব্যক্তির প্রয়োজন হতে পারে। 

৫। যদি প্রয়োজন হয়, তবে টাবের পাশেই একটি চেয়ারে রেখে টাবের ভিতরে যাওয়া ও টাব থেকে উঠে আসার জন্য সহায়তা করতে হবে। 

৬। শাওয়ারে গোসলের ক্ষেত্রে, একটি শাওয়ার চেয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। 

৭। ব্যক্তি হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী হলে, ব্যক্তিকে টাবে বা শাওয়ার চেয়ারে নেয়ার পর হুইলচেয়ারটি সরিয়ে ফেলতে হবে।

৮। ঘরটি উষ্ণ এবং আবর্জনামুক্ত হওয়া উচিত। 

৯। প্রয়োজনে ব্যবহারের আগে টাব পরিষ্কার করে নিতে হবে। 

১০। পানি দিয়ে টাৰ অর্ধেক ভরাট করে নিতে হবে। 

১১। ব্যক্তিকে টাব বা ঝরণাতে দেওয়ার আগে পানির তাপমাত্রা কনুই দিয়ে পরীক্ষা করে নিতে হবে। পানির তাপমাত্রা খুব বেশি হলে পুড়ে যেতে পারে। 

১২। কম ফেনা হয় বা সহজে ধুয়ে যায় এমন সাবান নির্বাচন করতে হবে। মেডিকেটেড সাবান হলে উত্তম। 

১৩। ব্যক্তির আগে গোসলের জায়গায় সমস্ত সরঞ্জাম আছে কিনা লক্ষ্য করতে হবে।

প্রক্রিয়াঃ 

১। যতটা সম্ভৰ গোপনীয়তা বজায় রেখে, প্রয়োজন মতো পোশাক অপসারণ করতে ব্যক্তিটিকে সহায়তা করে সাথে সাথেই ত্বক পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং ত্বকের কোনো সমস্যা লক্ষ্য করলে তা ফাইলে রেকর্ড করতে হবে। 

২। হাত ধুয়ে শুকিয়ে গ্লাভস পরতে হবে। 

৩। পানির তাপমাত্রা পরীক্ষা করার পরে ব্যক্তিকে টাবে বা শাওয়ারেও যেতে সহায়তা করতে হবে। 

৪। যদি সম্পূর্ণ সহায়তার প্রয়োজন হয়, তবে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে:

১। হাতের চারপাশে একটি ওয়ান রু পেঁচিয়ে নাও অথবা নরম ফাব ফোন বা স্পঞ্জ হাতে নিতে হবে। 

২। চোখের অঞ্চল থেকে পরিষ্কার করা শুরু করে ওয়াশ ক্লথ বা নরম স্ক্রাব ফোম বা স্পঞ্জে সাবান লাগিয়ে নিতে হবে। 

৩। পূর্বের নির্দেশনা অনুযায়ী মুখমণ্ডল, চোখ, হাত, পা, বগল পরিষ্কার করতে হবে। 

৪। গোপনাঙ্গ ধোয়া শেষ করতে হবে। 

৫। ত্বকের দুটি পৃষ্ঠতল যেখানে মিলবে সেখানে ভালোভাবে পরিষ্কারের ব্যাপারে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে (যেমন- গুনের নীচে, পায়ের আঙুলের মধ্যে, উরুর মাঝে)। 

৬। প্রয়োজনে চুলে শ্যাম্পু করে চুল ভালো করেও ধুরে ফেলতে হবে। 

৭। টাব বা ঝরণা থেকে ব্যক্তিটিকে পিচ্ছিল রোধক পাপোষের উপরে জানতে সাহায্য করতে হবে। 

৮। টাব বা শাওয়ারের পাশে রাখা চেয়ারে তাকে বসতে সহায়ত করতে হবে।

৯। চুলসহ সম্পূর্ণ শরীর শুকাতে সহায়তা করতে হবে। প্রয়োজনে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে । 

১০। পোশাক পরিচ্ছদের নিয়মাবলি অনুসরণ করে প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা করতে হবে। 

১১। ব্যক্তিকে তার কক্ষে নিয়ে সাথে যেতে হবে।

 

৪.৫.৩ বেডবাথ/স্পঞ্জবাথ (আংশিক গোসল) 

গোসলের পূর্ব প্রস্তুতি:

১। কখনও কখনও সম্পূর্ণ বাথ একটি রোগীর জন্য খুব ক্লান্তিকর হয়। ভাই, মুখ, হাত, বগল, যৌনাঙ্গ, পিঠ এবং নিজস্বকে অন্তর্ভুক্ত করে আংশিক গোসল বা বেডৰাথ বা স্পঞ্জবাস দেওয়া যেতে পারে। 

২। গোসলের সময় রোগীর অবস্থান তার শারীরিক অবস্থা এবং তার চলাফেরার ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। 

৩। শরীরে কোনো ব্যাভেজ থাকলে, ঐ স্থানের ত্বক পরিষ্কারের জন্য ব্যান্ডেজ অপসারণ করা যাবে কিনা এবং সেগুলো পুনরায় লাগিয়ে দিতে হবে কিনা তা আগে থেকেই চিকিৎসার ফাইল থেকে জেনে নিতে হবে। 

৪। দু'টি বড় বোলে গরম পানি ভরে নিতে হবে। একটি পরিষ্কার করে ধোয়ার জন্য এবং অন্যটি মুছার জন্য ব্যবহৃত হয়। পানির তাপমাত্রা ৯০-১০৫০ F হতে হয়। পানির তাপমাত্রা কনুই দিয়ে পরীক্ষা করে নিতে হবে।

৫। ঘরটি উষ্ণ এবং আবর্জনামুক্ত হওয়া উচিত। 

৬। কম ফেনা হয় বা সহজে ধুয়ে দেওয়া যায় এমন সাবান ও শ্যাম্পু নির্বাচন করতে হবে। মেডিকেটেড সাবানও শ্যাম্পু হলে উত্তমাশ্যাম্পু করার সময় বিছানাটি ভিজে যাওয়ার হাত থেকে বাচাতে রোগীর মাযার নিচে একটি অতিরিক্ত গামছা রেখে দিতে হবে। 

৭। ব্যক্তিকে জানার আগে গোসলের জায়গায় সময় সন্নাস আছে কিনা লক্ষ্য করতে হবে। 

৮। তিনটি পরিষ্কার তোয়ালে এবং দুইটি ওয়াশ রুম প্রস্তুত রাখতে হবে। 

৯। তোয়ালে, ওয়াশরুথ, পানির বোল এবং সাৰান কোনো পর্টেবল ট্রলিতে হাতের কাছে রাখা যেতে পারে। 

১০। রোগীর পিঠের নীচে দুটি তোয়ালে রেখে বিছানা ভিজে যাওয়া রোধ করতে হবে এবং প্রক্রিয়া চলাকালীন রোগীকে আরামদায়ক অবস্থায় রাখতে হবে। 

১১। রোগীকে একটি পরিষ্কার নিট বা তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।

১২। রোগীর পোশাক অপসারণ করে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে যে এই ধাপটি কিছু রোগীর জন্য বিব্রতকর হতে পারে, ভাই দ্রুত এবং উদ্দেশ্যমূলক মনোভাবের সাথে কাজ করার চেষ্টা করতে হবে।

 

প্রক্রিয়া:

১। যতটা সম্ভব গোপনীয়তা বজায় রেখে প্রয়োজন মতো পোশাক অপসারণ করতে ব্যক্তিটিকে সহায়তা করতে হবে। সাথে ত্বক পর্যবেক্ষণ করে নিতে হবে এবং ত্বকের কোনো সমস্যা লক্ষ্য করলে তা ফাইলে রেকর্ড করতে হবে। 

২। হাত ধুয়ে শুকিয়ে গ্লাভস পরতে হবে। 

৩। সম্ভব হলে নিরাপদ উচ্চতায় বিছানা উঠিয়ে নিতে হবে। সম্ভব না হলে, মাথার নিচে বেশি বালিশ দিয়ে নিরাপদ উচ্চতায় রোগীকে উঠিয়ে নেয়া যেতে পারে। 

৪। তোয়ালে এবং / অথবা ডিসপোজেবল প্যাড দিয়ে বিছানাপত্র সংরক্ষণ করতে হবে। যেখানে কাজ করা হবে সেই জায়গার নীচে একটি তোয়ালে রাখতে হবে। 

৫। গোসলের আগে রোগীকে বিছানায় ইউরিনাল সরবরাহ করে তাতে মূত্রত্যাগ করতে বলতে হবে। 

৬। রোগীকে একটি পরিষ্কার শিট বা তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। যে অংশটি পরিষ্কার করা হবে কেবল সেখানকার শিট বা তোয়ালে এবং পোশাক সরিয়ে ফেলতে হবে। 

৭। বিছানায় গোসলের সময় বোলের পানি পরিবর্তন করার প্রয়োজন হতে পারে। প্রতিবার যখন বোলের পানি পরিবর্তন করা হবে, তখন সর্বদা পানির তাপমাত্রা পুনরায় পরীক্ষা করে নিতে হবে। 

৮। হাতের চারপাশে একটি ওয়াশ ক্লথ পেঁচিয়ে নিয়ে অথবা নরম স্ক্র্যাব ফোম বা স্পঞ্জ হাতে নিয়ে নিতে হবে। প্রথমে চোখ থেকে শুরু করতে হবে। পরিষ্কার হালকা গরম পানিতে পাতলা ছোট রুমাল ভিজিয়ে চোখের পরিধি (চোখের চারপাশের বৃত্তাকার অঞ্চল) ভালোভাবে মুছে দিতে হবে। জ্বালাপোড়া এড়ানোর উদ্দেশ্যে এই অঞ্চলে সাবান ব্যবহার না করাই ভালো। চোখের ভিতরের কোণা থেকে বাইরের কোণার দিকে হাতের রুমালটি পরিচালিত করতে হবে।

৯। পুরো শরীরের জন্য একই পরিষ্কারকরণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। প্রথমে রোগীর ত্বকে সাবান বা সাবান পানি প্রয়োগ করতে হবে। ময়লা এবং ব্যাকটিরিয়া অপসারণ করতে ১ম ওয়াশ ক্লথ দিয়ে আলতো করে স্ক্রাব করে একটি পানির বোলে ওয়াশ ক্লথ রাখতে হবে। অপর পানির বোলে দ্বিতীয় ওয়াশক্লথ ভিজিয়ে ভালোমত চিপে নিয়ে শরীরের সাবান মুছে ফেলতে হবে। তোয়ালে দিয়ে ভেজা জায়গাগুলো শুকনো করে নিতে হবে। ওয়াশ ক্লথগুলো যদি বেশি ময়লা হয়ে যায় তবে পরিষ্কার করে বদলিয়ে নাওতে হবে। 

১০। ধীরে ধীরে সাবান পানি দিয়ে রোগীর মুখ, কান এবং ঘাড় ধুয়ে ফেলতে হবে। আলাদা ওয়াশ ক্লথ দিয়ে সাবান মুছে ফেলে তোয়ালে দিয়ে ভেজা জায়গাগুলো শুকনো করতে হবে। 

১১। রোগীর বাম হাত এবং কাঁধ ধুয়ে নিতে হবে- শরীরের বামদিকে শীটটি নীচে পশ্চাদ দেশ পর্যন্ত ভাঁজ করে উন্মুক্ত বাহুর নীচে একটি তোয়ালে রাখতে হবে। রোগীর কাঁধ, বগল, বাহু এবং হাত ধুয়ে মুছে ফেলে তোয়ালে দিয়ে ভেজা জায়গা গুলো শুকনো করতে হবে। রোগীকে উষ্ণ রাখতে শীটটি নিয়ে পুনরায় ঢেকে দিতে হবে।

১২। রোগীর ডানহাত এবং কাঁধ ধুয়ে নিতে হবে- শরীরের ডানদিকে শীটটি নীচের পশ্চাদেশ পর্যন্ত ভাঁজ করে উন্মুক্ত বাহুর নীচে একটি তোয়ালে রাখতে হবে। রোগীর কাঁধ, বগল, বাহু এবং হাত ধুয়ে মুছে ফেলতে হবে। তোয়ালে দিয়ে ভেজা জায়গাগুলো শুকনো করে রোগীকে উষ্ণ রাখতে শীটটি দিয়ে পুনরায় ঢেকে দিতে হবে। 

১৩। রোগীর খড় ধুয়ে ফেলতে হবে- শীটটি কোমরের নিচে ভাঁজ করে ধীরে ধীরে বুক, পেট এবং পাশগুলো ধুয়ে ফেলতে হবে। রোগীর ত্বকের যে কোনো ভাঁজগুলোর মধ্যে যেহেতু ব্যাকটিরিয়া আটকা পড়ে, তাই সেখানে সাবধানে ধুয়ে ফেলতে ভুলা যাবেনা। তোয়ালে দিয়ে ভেজা জায়গাগুলো শুকনো করতে হবে। রোগীকে উষ্ণ রাখতে শীটটি দিয়ে পুনরায় ঢেকে দিন। 

১৪। রোগীর পা ধুয়ে ফেলতে হবে- রোগীর ডান পারের কোমর পর্যন্ত উন্মুক্ত করে পা ধুয়ে মুছে শুকিয়ে নিতে হবে। ডান পা শীটটি দিয়ে পুনরায় ঢেকে দিয়ে ৰাম পা উন্মুক্ত করে ধুয়ে মুছে শুকিয়ে নিতে হবে। বাম পা শীটটি দিয়ে পুনরায় ঢেকে দিতে হবে।

১৫। পিঠ ও নিতম্ব পরিষ্কার করতে হবে- পানির বোল গুলো খালি করে পরিষ্কার পানি দিয়ে পুনরায় ভরে নিতে হবে। সম্ভব হলে তাদেরকে এক পাশে ফিরিয়ে রোগীর পিঠ এবং নিতম্ব ধুয়ে দিতে হবে। রোগীর পুরো পেছনের অংশটি উন্মুক্ত করতে পীটটি ভাঁজ করে রোগীর পিঠ, নিতম্ব এবং পা গুলো ধুয়ে মুছে শুকিয়ে ফেলতে হবে। 

১৬। গোপনাঙ্গ ধুয়ে ফেলতে হবে। 

১৭। রোগীর চুল ধুয়ে-মুছে শুকিয়ে ফেলতে হবে। 

১৮। কাজ শেষ হয়ে গেলে, রোগীকে পরিষ্কার কাপড় পরাতে হবে। প্রবীণদের ত্বক শুকিয়ে যাওয়ার ঝোঁক থাকে, তাই কাপড় পরানোর আগে হাত এবং পায়ে লোশন লাগিয়ে দিতে হবে। 

১৯। ব্যক্তির চুল আঁচড়িয়ে প্রসাধনী এবং শরীরে অন্যান্য ব্যবহার্য পণ্যগুলো রোগীর পছন্দ অনুসারে প্রয়োগ করতে হবে।

 

৪.৫.৪ শ্যাম্পু করা 

১। রোগীকে প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করতে হবে। 

২। হাত ধুয়ে শুকিয়ে গ্লাস পরতে হবে। 

৩।রোগীদের পছন্দনীয় পণ্যগুলো কি, তা জেনে নিয়ে নিশ্চিত করতে হবে যে, রোগীর কোন পণ্যগুলোতে অ্যালার্জি নেই।

৪। রোগীকে সোজা করে শোয়াতে হবে। রোগীর মাথা এবং কাঁধের নীচে একটি পানিরোধক প্যাড বা তোয়ালে রেখে এই অঞ্চলটি শুকনো এবং উষ্ণ রাখার জন্য কাঁধ এবং বুকের জায়গার উপরে একটি তোয়ালে রাখতে হবে। রোগীর বাকী অংশটি কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। 

৫। রোগীর চোখ, কান এবং মুখ ভিজে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে হবে। মর্গ ব্যবহার করে পরিষ্কার, ঊষ্ণ পানির মাধ্যমে চুলগুলো ভালোমত ভিজিয়ে নিতে হবে। 

৬। হাতে শ্যাম্পু নিয়ে দুইভহাতে ঘষতে হবে। রোগীর মাথার সামনের দিক থেকে চুলের শেষ প্রাপ্ত পর্যন্ত শ্যাম্পু ম্যাসাজ করত হবে। আঙুলের মাথা দিয়ে বৃত্তাকার গতি ব্যবহার করে রোগীর মাথার ত্বকে শ্যাম্পু ম্যাসেজ করতে হবে। নখ দিয়ে ম্যাসাজ করলে মাথার ত্বক ক্ষত হতে পারে।

৭। পানি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত চুল ধুতে থাকতে হবে। রোগীর চোখের ও কানের সুরক্ষার জন্য রোগীর কপালে মাথার ত্বক সোজাসুজি ধুয়ে ফেলতে হবে । 

৮। কন্ডিশনার ব্যবহার করা হলে পূর্বের তিনটি পদক্ষেপ পুনরাবৃত্তি করতে হবে। 

৯। শুকনো তোয়ালে ব্যবহার করে রোগীর যুদ্ধ, মাথা এবং ঘাড় থেকে পানি মুছতে হবে। প্রয়োজনে নিরাপদ দূরত্ব থেকে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। 

১০। ব্রাশ ব্যবহার করে চুল আঁচড়ে দিতে হবে।

 

৪.৫.৫ গোপনাঙ্গের যত্ন 

পুরুষদের গোপনাঙ্গের যত্ন 

১। রোগীকে প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করতে হবে। 

২। শরীরের অন্যান্য অংশ যেই গ্লাস দিয়ে পরিষ্কার করা হয় সেটা খুলে হাত ধুয়ে শুকিয়ে নতুন গ্লাস পরতে হবে। 

৩। রোগীদের পছন্দনীয় পণ্যগুলো কি তা জেনে নিয়ে নিশ্চিত করতে হবে যে, রোগীর কোনো পঞ্চগুলোতে অ্যালার্জি নেই। 

৪। সুন্নতে খাৎনা না হয়ে থাকলে পুরুষাঙ্গের ফোরস্কিন আলতো করে পিছনের দিকে নিয়ে যেতে হবে। সম্পূর্ণ ডাল ধুয়ে নিতে হবে। প্রতিটি স্ট্রোকের জন্য ওয়াশরুমের একটি পরিষ্কার অংশ ব্যবহার করতে হবে। ফোরস্কিনটি আলতো করে আবার তার স্বাভাবিক অবস্থানে ঠেলে দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে ভুলে যাওয়া যাবে না ।

মহিলাদের গোপনাঙ্গের যত্ন:

১। রোগীকে প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করতে হবে। 

২। শরীরের অন্যান্য অংশ যেই গ্লাবস দিয়ে পরিষ্কার করা হয় সেটা খুলে হাত ধুয়ে শুকিয়ে নতুন গ্লাবস পরতে হবে। 

৩। রোগীদের পছন্দনীয় পণ্যগুলো কি তা জেনে নিয়ে নিশ্চিত করতে হবে যে, রোগীর কোন পণ্যগুলোতে অ্যালার্জি নেই। 

৪। একক স্ট্রোক দিয়ে পেরিনিয়াম অঞ্চলটি সামনে থেকে পিছনে ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রতিটি স্ট্রোকের জন্য ওয়াশক্লথের একটি পরিষ্কার অংশ ব্যবহার করতে হবে। একপাশে ল্যাবিয়া মাজোরা মুছে তারপরে অন্য ল্যাবিয়া মাজোরা মুছতে হবে। ল্যাবিয়া আলাদা করে ছড়িয়ে দিয়ে প্রতিটি স্ট্রোকের জন্য ওয়াশক্লথের একটি পরিষ্কার অংশ ব্যবহার করতে হবে। একটি পরিষ্কার অংশ ব্যবহার করে প্রতিটি পাশের অংশ পিছনের দিকে মুছতে হবে। যোনিটির প্রারম্ভ পর্যন্ত মধ্য থেকে নীচপর্যন্ত মুছতে হবে। যোনি এবং মলদ্বারের মধ্যবর্তী অঞ্চলটি পরিষ্কার করে সামনে থেকে পিছনে ধৌত করতে হবে।

 

৪.৬ রোগীকে সাধারণ গৃহস্থালীর কাজকর্মে সহায়তা করা।

একটি বাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখা হচ্ছে সাধারণ গৃহস্থালির কাজের অংশ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বাড়িকে সংক্রমণ এবং কীটপতঙ্গ মুক্ত রাখে এবং রোগীকে শারীরিক, মানসিক প্রশান্তিতে রাখতে সাহায্য করে। এই চ্যাপ্টারে আমরা রোগীর বাড়িতে কিভাবে সাধারণ গৃহস্থালির কাজ-কর্মে সহযোগীতা করতে পারা সেই ব্যাপারে আলোচনা করবো।

৪.৬.১ একজন পরিচর্যাকারী গৃহস্থালির কি কি করেন?

কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরিচর্যাকারী, গৃহকর্মী, এবং বেবিসিটারদের প্রায় একই রকম কাজ রয়েছে। তাদের সাধারণ কাজগুলোর মধ্যে নিম্নলিখিতগুলো সহযোগীতাগুলো অন্তর্ভুক্ত:

১। রান্নাঘরের কাজ, ২। খাবার কেনাকাটা, ৩। খাবার রান্না করা ৪, খাবার পরিবেশন করা ৫। ঘর পরিষ্কার করা, ৬। থালা-বাসন ধোয়া। ৭। কাপর চোপড় লন্ড্রি করা। ৮। শিশু যত্ন, যার মধ্যে ডায়াপার পরিবর্তন, স্নান এবং তত্ত্বাবধান করা। ৯। প্রবীণদের যত্ন, যার মধ্যে স্নান, সাহচর্য এবং ডাক্তারের সাথে দেখা করার মত কাজ ।

 

৪.৭ খাওয়ানোর জন্য উপযুক্ত পদ্ধতি ও অবস্থান

সাধারণ পদ্ধতি

যদি গ্রাহক নড়াচড়া করতে পারে এবং গুরুতর অসুস্থ না হয়, তাহলে- 

১। নিশ্চিত করতে হবে যে, অচলাবস্থায় গ্রাহক যেন মাথা, পিঠ ও ঘাড় সোজা করেও বসতে পারে। দরকার হলে পিছনে বালিশ দিয়ে পিছনের দিকে হেলান দিয়ে বসতে সাহায্য করতে হবে।

২। মাথা সামনের দিকে নিয়ে চিবুক সামান্য নিচু করতে বলতে হবে। 

৩। প্যারালাইসিস ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে খাবার গলধকরণ করতে অসুবিধা হতে পারে। কারো কারো একপাশ বা উভয় পাশই দুর্বল হতে পারে। যেগাশ বেশি দুর্বল সেই পাশে সাপোর্ট দিতে হবে। 

৪। খাওয়ানোর সময় ব্যক্তির চোখের লেভেল বরাবর বা তার নীচে বসিয়ে নিতে হবে। 

৫। খাওয়ানোর সময় ব্যক্তিকে ফিডিং গাউন পরিয়ে নিতে হবে। 

৬। ব্যক্তির মুখে স্নায়ুজনিত কোনো দুর্বলতা থাকলে, অপেক্ষাকৃত সকল পাশে বসে খাওয়াতে হবে। ব্যক্তির মুখের অপেক্ষাকৃত সবল অংশে খাবার রাখতে হবে। 

৭। ব্যক্তি নিজের হাতে খেতে পছন্দ করলে তার চোখের ভিজ্যুয়াল ফিল্ড সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। এমনভাৰে তার সামনে খাবার রাখতে হবে যেন তিনি খাবারের স্থান বুঝতে পারেন। 

৮। শয্যাশায়ী ব্যক্তিদের বিছানার খাবার পরিবেশন করতে ট্রলি ব্যবহার করতে হবে।

ব্যক্তির ডিজফ্যাজিয়া বা খাবার গলধকরণে সমস্যা বা মুখে স্নায়ুজনিত কোনো দুর্বলতা থাকলে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো খেয়াল করতে হবে: 

১। কাশি / দমবন্ধ, ২। অস্পষ্ট কন্ঠস্বর, ৩। খাবারের জন্য দীর্ঘ সময় নেওয়া / ঘুমিয়ে পড়া, ৪। খাওয়া বা পান করার সময় অসুবিধা, ৫। খেতে অনীহা, ৬। খাবার মুখে আটকে যাওয়া, ৭। পালে খাবার গ্রুপে রাখা, ৮। খাবার / গানীয় সুখ থেকে পড়া

 

৪.৮ নাজোগ্যাস্ট্রিক ফিডিং

১। গ্রাহককে পদ্ধতিটি ব্যাখ্যা করতে হবে। 

২। একজন সহকারী পাশে রাখতে হবে। 

৩। হাত ধুয়ে নিতে হবে। 

৪। ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম পরে সহকারীকে প্লাস পড়তে বলতে হবে। 

৫। খাওয়ানোর সময় রোগীকে ফিডিং গাউন পরিয়ে নিতে হবে। 

৬। খাওয়ানোর সময় রোগীকে ৩০ ডিগ্রী কোণে বসিয়ে নিতে হবে। 

৭। হাতের কাছে পরিষ্কার ট্রলির উপরে খাওয়ানোর সরঞ্জামগুলো রাখতে হবে। 

৮। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীকে প্রস্তাবিত খাদ্যের উপাদান, পরিমাণ ও সময় নির্ধারণ করে নিতে হবে।

 

৪.৯ কাপড় ধৌত করা

পরনের বস্ত্র যদি শরীরের ঘাম বা সম্ভাব্য সংক্রামক উপকরণ দিয়ে নোংরা হয়, তবে এটিকে দূষিত হিসাবে বিবেচনা করতে হবে। ডিসপোজেবল গ্লাভস পরে ডিটারজেন্ট এবং ব্লিচ দ্রবণ পানিতে মিশিয়ে আইটেমগুলো ধুয়ে ফেলতে হবে।

৪.১০ থালা-বাসন ধৌতকরণ

১। গরম পানি এবং সাবান দিয়ে থালা বাসন ধুয়ে ফেলতে হবে। 

২। চূড়ান্তভাবে কাপর ধোয়ার আগে পানিতে জীবাণুনাশক হিসেবে প্রয়োজনমত ক্লোরিন বিচ যোগ করে এই দ্রবণে থালা-বাসন, কাচের পাত্র এবং অন্যান্য পাত্রগুলো অন্তত এক মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। 

৩। থালা-বাসনগুলো আবার গরম পানিতে ধুয়ে ফেলে বাতাসে শুকিয়ে নিতে হবে।

৪.১০.১ রান্নাঘর পরিষ্কার করা

১। রান্নাঘর, রান্নাঘড়েরের সারফেস কাউন্টার টপস, রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার পরিষ্কার করার পর স্যানিটাইজ করার জন্য ব্লিচিং দ্রবন ব্যবহার করতে হবে। 

২। দীর্ঘ সময় অথবা বার বার স্যানিটাইজ সল্যুশন ব্যবহার করা লাগলে হাতে গ্লোভস পরে নিতে হবে। 

৩। ব্লিচিং দ্রবন ব্যবহারের পূর্বে নির্দেশাবলি এবং সতর্কতাগুলো ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে।

৪.১১ রোগীকে হালকা ব্যায়াম করানো

বাড়িতে শারীরিক অনুশীলনের গুরত্ব

১। শারীরিক ও মানসিক প্রফুল্লতা লাভ করে। 

২। পেশী শক্তি এবং হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়, ফলে পরে যাওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়ক হতে পারে কারণ এটি ভারসাম্যও উন্নত করতে পারে। অস্টিওপরোসিস এবং ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে। 

৩। নিয়মিত কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস করে। 

৪। ডিমেনেশিয়া হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়। 

৫।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। 

৬। অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি রোধ করে।

প্রস্তুতি:

১। চিকিৎসক বা ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী অনুশীলনের ধরণ নির্বাচন করতে হবে। 

২। ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা ও পছন্দ বিবেচনায় রাখৎ হবে। 

৩। অনুশীলনের ধরণ ও পদ্ধতি ব্যক্তিকে সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করতে হবে। 

৪। সম্ভব হলে ব্যায়ামের পোশাক পরতে উৎসাহিত করতে হবে।  

৫। এই অনুশীলন করানোর জন্য ব্যয়বহুল সরঞ্জাম বা জিমে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। 

৬। প্রয়োজনে ফিজিওথেরাপিস্টের সাহায্য নিতে হবে।

 

8.১১.১ কোর কি ?

কোর বলতে পেটের পেশী, পিছনের পেশী এবং নিজম্ব শ্রোণির পেশী নিয়ে গঠিত অংশকে বুঝায়। কোর দেহের স্ট্যাবিলাইজার হিসাবে কাজ করে, মেরুদণ্ডকে সুরক্ষা দেয় এবং প্রায় প্রতিটি শারীরিক কাজের সময় কাজে লাগে। 

৪.১১.২ বয়স্ক ও অসুস্থ রোগীদের অন্য সেরা কোর অনুশীলন :

১। সাইড বেল্ড

ক। একটি চেয়ারে গ্রাহককে বসিয়ে তার এক হাত মাথার পিছনে রাখতে হবে। অন্য হাত প্রসারিত করতে হবে। 

খ। পাশের দিকে এমনভাবে ব্যক্তিকে ধরে বাকাতে হবে বা তিনি নিজে পারলে তাকে বাকতে নির্দেশনা দিতে হবে, যেন তিনি তার প্রসারিত হাত দিয়ে মেঝেটি স্পর্শ করার চেষ্টা করতে পারেন।

গ। তারপরে প্রারম্ভিক অবস্থানে ফিরে আসতে হবে। 

ঘ। দুইপাশে কয়েকবার পুনরাবৃদ্ধি করতে হবে।

২। পা উত্তোলন

১। মেঝেতে একটি কার্পেটে বা ইয়োগা ম্যাট বিছিয়ে ব্যক্তিকে শুয়ে পড়তে সাহায্য করতে হবে।

২। মেঝে থেকে একটি পা পাঁচ ইঞ্চি উপরে উঠিয়ে প্রায় তিন সেকেন্ডের জন্য এই ভঙ্গি রাখতে হবে। 

৩। অন্য পায়েও এটা পুনরাবৃত্তি করতে হবে।

৩। উড চপিং পোজ 

উড চপিং পোজ নামকরণ করা হয়েছে কারণ অনুশীলনটি সম্পাদনকারী ব্যক্তিকে দেখে মনে হয় যে তিনি কাঠ কাটছেন। 

১। একটি চেয়ারে গ্রাহককে বসাতে হবে। 

২। ব্যক্তি দুই হাত দিয়ে ধরে রাখতে পারবে এমন একটি বল বা হালকা বস্তু হাতে দিয়ে তাকে ভার মাথার বাম দিকে দুই বাহু উপরে উঠাতে বলতে হবে। 

৩। তির্যকভাবে ব্যক্তির শরীরে আড়াআড়িভাবে দুই বাহু একসাথে ডান দিকে নিচে নামাতে সাহায্য করতে হবে। 

৪। প্রারম্ভিক অবস্থানে ফিরে গিয়ে বিপরীত পাশে প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করতে হবে।

৫। প্রতি পাশে প্রক্রিয়াটি কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করৎ হবে।

 

৪.১১.৩ বয়স্ক ও অসুস্থ রোগীদের পায়ের অনুশীলন

১। গোড়ালি ঘুড়ানো:

১। ব্যক্তির পায়ের গোড়ালী চিত্রের ন্যায় ঘুড়াতে সাহায্য করতে হবে।

২। হাঁটু এক্সটেনশন:

১। একটি চেয়ারে গ্রাহককে বসাতে হবে। 

২। হাঁটু আন্ধে আস্তে সামনের দিকে প্রসারিত করতে সাহায্য করতে হবে। 

৩। এতে ব্যক্তির কাফ মাসলেরও ভালো অনুশীলন হবে।

৩। হাঁটু ফ্লেক্সন ও নিতম্ব এক্সটেনশন: 

১। সম্ভব হলে ব্যক্তিকে দাড় করিয়ে নিতে হবে। 

২। কোমরে দুই হাত রাখতে বলতে হবে। 

৩। পা সামনের দিকে নিয়ে হাঁটু বাকা করতে সাহায্য করতে হবে।

 

৪। উঠা-বসাঃ 

১। একটি চেয়ারে গ্রাহককে বসাতে হবে । 

২। সামনের দিকে কাঁধ ও হাত সোজা করে রাখতে বলতে হবে, যেন পিঠ সোজা থাকে। 

৩। স্বাভাবিক নিয়মে বসা থেকে উঠতে ও দাড়ানো থেকে বসতে বলতে হবে। 

৪। প্রক্রিয়াটি কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করতে হবে।

৫। হিল স্লাইড:

১। একটি চেয়ারে গ্রাহককে বসাতে হবে। 

২। শরীরের সামনে দিকে এক পা প্রসারিত করাতে হবে, যেন পায়ের আঙ্গুলগুলো সামনের দিকে নির্দেশিত থাকে। 

৩। প্রসারিত পায়ের পাদদেশকে সমতল রাখতে হবে, মেঝের উপড়ে চাপ দিয়ে পাটি ধীরে ধীরে শরীরের দিকে টেনে আনতে হবে যতক্ষণ না এটি আগের অবস্থানে পৌঁছায়। 

৪I পা আগের অবস্থানে ফিরে গেলে অপর পারে একই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে। 

৫। এভাবে প্রক্রিয়াটি কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করতে হবে।

 

৪.১৫.৪ -ইরোগা/যোগ ব্যায়াম:

উপকারিতা: 

১। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

২। শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখে। 

৩। বাত, ব্যথা এবং প্রদাহ হ্রাস করে। 

৪। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 

৫। আইবিএসের মতো হজমজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 

৬। ঘুমের মান উন্নত করে। 

৭। শোক শিতিল করার একটি উপায়। 

৮। হতাশা এবং উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

প্রস্তুতি 

১। ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করতে হবে যে, তিনি যোগ ব্যায়ামের জন্য উপযুক্ত কিনা। প্রয়োজনে চিকিৎসক ও যোগ ব্যায়ামের প্রশিক্ষকের সাথে আলোচনা করতে হবে।

২। যোগব্যায়ামের জন্য আরামদায়ক, প্রসারিত পোশাক নির্বাচন করতে হবে। 

৩। যোগব্যায়ামের জন্য আরামদায়ক ঢিলেঢালা পোশাক লাগবে । 

৪। একজন যোগ্য প্রশিক্ষকের সন্ধান করতে হবে। 

৫। অল্প অল্প করে শুরু করতে পরামর্শ দিতে হবে। 

৬। প্রশিক্ষক ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা বুঝে যোগাসন নির্বাচন করতে হবে।

 

জব ১: রোগীকে ওরাল হাইজিন বজায় রাখতে সহযোগীতা করা

পারদর্শীতার মানদণ্ড :

১। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) ও নির্ধারিত পোশাক পরিধান করে নিতে হবে। 

২। প্রয়োজন অনুযায়ী মুখগহবরের যত্ন নেয়ার জন্য একটি জায়গা উপযুক্ত করে তুলতে হবে। 

৩। জব অনুযায়ী টুলস, ইকুইপমেন্ট, ম্যাটেরিয়্যাল বাছাই এবং সংগ্রহ করতে হবে। 

৪। কাজে সহায়তা করার জণ্য রোগীকে প্রস্তুত রাখতে হবে। 

৫। ওরাল হাইজিং দেওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী কাজের স্থানটি পরিষ্কার করে রাখতে হবে। 

৬। ব্যবহৃত জিনিসসমূহ নির্ধারিত বিনে/বর্জ্য পাত্রে ফেলে দিতে হবে। 

৭। কাজ শেষে রেকর্ড শীটে নথিভুক্ত ক্রতে হবে।

ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (PPE): প্রয়োজন অনুযায়ী। 

প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি/ইকুইপমেন্ট

একটি পরিষ্কার ট্রেতে যে জিনিসগুলো থাকবে :

১। ম্যাকিংটোস এবং টাওয়েল (Mackintosh and Towel), ২। টুথব্রাশ এবং পেস্ট (Toothbrush and paste), ৩। মাউথ ওয়াশ সলিউশন (Mouth wash solution), ৪। এক কাপ পানি (A cup of water), ৫। ফেইস টাওয়েল (Face Towel), ৬। স্পঞ্জ ক্লোথ (Sponge Cloth), ৭। টাং ডিপ্রেসর (Tongue depressor), ৮। গজ পিছ (Gauze piece), ৯। কিডনি ট্রে (Kidney Tray), ১০। এক বোল পরিষ্কার পানি (A bowl of clean water) 

কাজের ধারা:

১। কাজের জন্য উপযুক্ত পিপিই (PPE) পরতে হবে। 

২। নির্দেশিকা অনুযায়ী হাত ধৌত করতে হবে। 

৩। সমস্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ, সরবরাহকৃত সরঞ্জাম সংগ্রহ করে এবং প্রস্তুত করতে হবে। 

৪। দুই হাতে ক্লিন গ্লোভস পড়ে রোগীকে ওরাল হাইজিং দেওয়ার পদ্ধতি ব্যাখ্যা করে এবং মৌখিক সম্মতি নিতে হবে। 

৫। রোগীর পজিশন আরামদায়ক অবস্থায় নিয়ে নিতে হবে। 

৬। রোগীর মুখগহবর, দাঁত এবং গলার ভিতর পরীক্ষা করে একের পর এক ধাপ মেনে কাজটি সম্পন্ন করতে হবে। 

৭। রোগীর বুকের উপর এবং থুতনীর নীচে ম্যাকিংটোস/ রাবার ক্লথবিছিয়ে নিতে হবে। 

৮। রোগীকে বিছানা থেকে ৪৫ ডিগ্রী কোণে পজিশনিং করে মুখের বিপরীতে একটি কিডনি ট্রে ধরে রাখতে হবে। 

৯। রোগী অচেতন থাকলে টাং ডিপ্রেসর দিয়ে মুখের চোয়াল হাঁ করে নিতে হবে। 

১০। কাপের মধ্যে রাখা সলিউশন -এর মধ্যে জীবানুমুক্ত একপিছ গজ ভিজিয়ে নিংড়িয়ে নিয়ে রোগীর মাড়ি ও মুখের ভিতর উপর -নীচ করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। 

১১। সচেতন রোগীর ক্ষেত্রে টুথব্রাশে পেষ্ট লাগিয়ে ছবিতে নির্দেশিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। 

১২। রোগীকে গ্লাসে প্রয়োজন অনুযায়ী পানি দিয়ে কুলকুচি করে উক্ত পানি বেসিনে ফেলে দিতে বলতে হবে। 

১৩। রোগীর মুখমণ্ডল ফেইস টাওয়েল দিয়ে মুছে দিতে হবে। 

১৪। ব্যবহৃত হয়েছে এমন জিনিসগুলো নির্ধারিত বিনে/বর্জ্য পাত্রে রাখতে হবে। 

১৫। প্রয়োজনীয় তথ্য রেকর্ড চার্টে লিপিবদ্ধ করতে হবে। 

১৬। পুনরায় ব্যবহারযোগ্য সরঞ্জাম, উপকরণসমূহ এবং কাজের এলাকাটি পরিষ্কার করে নির্দেশনা অনুসারে সরঞ্জাম ও উপকরণসমূহ নির্দিষ্ট জায়গায় সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।

কাজের সতর্কতাঃ

 ১। কাজের সময় পিপিই ব্যবহার করতে হবে। 

২। রোগীর সহযোগীতা পেতে পুরো পদ্ধতিটি বর্ণনা ও শেয়ার করতে হবে। 

৩। ওরাল হাইজিং দেওয়ার পূর্বে রোগীকে ধুমপান ও তামাকজাত দ্রব্য পরিহার করার বিষয়টি অবহিত করতে হবে। 

৪। রোগীর মুখে কোন আর্টিফিসিয়াল দাঁত কিংবা ডেঞ্চার আছে কিনা তা অবশ্যই পরীক্ষা করে নিতে হবে। 

৫। কাজ শুরু করার পূর্বে রোগীকে আরামদায়ক অবস্থানে পজিশনিং করে নিতে হবে। 

৬। কাজটি সম্পন্ন করতে সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।

অর্জিত দক্ষতা/ফলাফল: তুমি ওরাল হাইজিং প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছ। 

ফলাফল বিশ্লেষণ/মন্তব্য: আশাকরি বাস্তব জীবনে তুমি এর যথাযথ প্রয়োগ করতে পারবে ।

 

জব ২: বেডপ্যানের মাধ্যমে রোগীকে টয়লেটিং এ সহযোগীতা করা

পারদর্শীতার মানদন্ড: 

১। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) ও নির্ধারিত পোশাক পরিধান করতে হবে।

২। প্রয়োজন অনুযায়ী বেডপ্যানের মাধ্যমে টয়লেটিং এর জন্য রোগীর বিছানাকে উপযুক্ত করে তুলতে হবে। 

৩। জব অনুযায়ী টুলস, ইকুইপমেন্ট, ম্যাটেরিয়াল বাছাই এবং সংগ্রহ করতে হবে। 

৪। কাজে সহায়তা করার জণ্য রোগীকে প্রস্তুত রাখতে হবে। 

৫। টয়লেটিং-এর কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী কাজের স্থানটি পরিষ্কার করে রাখতে হবে । 

৬। ব্যবহৃত জিনিসসমূহ নির্ধারিত ময়লার বিনে/বর্জ্য ধারকে ফেলে দিতে হবে। 

৭। কাজ শেষে রেকর্ড শীটে জবের আউটপুট নথিভুক্ত করতে হবে।

ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (PPE): প্রয়োজন অনুযায়ী। 

প্রয়োজনীয় পাতি/ইকুইপমেন্ট/ ম্যাটেরিয়ালস: 

১। এক বেসিন ষ্ণ গরম পানি (A basin with warm water) 

২। ডিজেবল গ্লাভস (Disposable gloves) 

৩। টয়লেট পেপার (Toilet paper ) 

৪। তোয়ালে (Towels) 

৫। পরিষ্কার কাপড় বা ভিজা ওয়াইপস (Wash cloths or wet wipes )

কাজের ধারা:

১। কাজের জন্য উপযুক্ত পিপিই (PPE) পরতে হবে। 

২। নির্দেশিকা অনুযায়ী হাত ধৌত করতে হবে। 

৩। সমস্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ, সরবরাহকৃত সরঞ্জাম সংগ্রহ করে তা প্রস্তুত করতে হবে। 

৪। বেডপ্যানটিকে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিয়ে বেডপ্যান খালি করে নিতে হবে।

৫। বেডপ্যানের উপরিভাগে ট্যাঙ্কম পাউডার ব্যবহার করতে হবে যাতে রোগীর ত্বকের সাথে এটি এটে না যায়।

৬। বেডপ্যানের টয়লেট টিস্যু / পানি অথবা ভেজিটেবল অয়েল স্প্রে করতে হবে যাতে পরবর্তীতে বেডপ্যানটি সহজে পরিষ্কার করা যায়। 

৭। রোগী যদি সক্ষম হয় তাহলে তাকে উক্ত কাজে সহযোগীতা করার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। 

৮। ব্যক্তির গাউনটি উপরে তুলে ব্যক্তিকে তার বাটকের নীচে বেডপ্যানটি রাখতে বলতে হবে। 

৯। যদি রোগী ভার হিপ উপরে জাগাতে না পারে তাহলে তাকে পাশে ঘুরিয়ে তারপর বেডপ্যানের উপরে ফিরিয়ে দিতে হবে।

১০। যদি ব্যক্তি তার মলদ্বারের এলাকা পরিষ্কার করতে না পারে, তাহলে জায়গাটি পরিষ্কার করার জন্য একটি ভেজা টিস্যু ব্যবহার করতে হবে।

১১। যদি কোনো মহিলার প্রস্রাব হয় তবে সেই জায়গায় এক কাপ গরম পানি ঢেলে শুকিয়ে নিতে হবে। 

১২। বেডপ্যানটি সরিয়ে পরিষ্কার করে খালি করে জমাকৃত বর্জ্য টয়লেটে ফেলতে হবে। 

১৩। হাতের গ্লোভস ও ব্যবহৃত হয়েছে এমন জিনিসগুলো নির্ধারিত ময়লার বিনে/ বর্জ্য ধারকে রাখতে হবে। 

১৪। ব্যক্তির হাত ধুয়ে নিজের হাত আবার ধৌত করতে হবে। 

১৫। প্রয়োজনীয় তথ্য রেকর্ড চার্টে লিপিবদ্ধ করতে হবে। 

১৬। কাজের এলাকাটি পরিষ্কার করে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য সরঞ্জাম, উপকরণসমূহ নির্দেশ অনুসারে নির্দিষ্ট জায়গায় সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।

কাজের সতর্কতা:

১। কাজের সময় পিপিই ব্যবহার করতে হবে। 

২। রোগীর সহযোগীতা প্রত্যাশা করতে পুরো পদ্ধতিটি অবহিত করতে হবে। 

৩। যখন রোগীকে সরাতে সাহায্য করা লাগবে তখন নিজের নিরাপদ থাকার ব্যাপারেও গুরুত্ব দিতে হবে। 

৪। রোগীকে সাহায্য করার আগে, ঐ বিষয়ে বিজ্ঞান সম্মত নির্দেশাবলি ভালোভাবে রপ্ত করে নিতে হবে। 

৫। কাজ শুরু করার পূর্বে রোগীকে আরামদায়ক অবস্থানে পজিশনিং করে নিতে হবে। 

৬। কাজটি সম্পন্ন করতে সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।

অর্জিত দক্ষতা/ফলাফল: তুমি বেডপ্যানের মাধ্যমে রোগীকে টয়লেটিং করানোর প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছ। 

ফলাফল বিশ্লেষণ/মন্তব্য: আশাকরি বাস্তব জীবনে তুমি এর যথাযথ প্রয়োগ করতে পারবে ।

 

জব ৩: প্রাপ্ত বয়স্কদের ডায়াপার খোলা ও পরানো

পারদর্শীতার মানদণ্ড : 

১। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) ও নির্ধারিত পোশাক পরিধান করতে হবে। 

২। প্রয়োজন অনুযায়ী বেডপ্যানের মাধ্যমে টয়লেটিং এর জন্য রোগীর বিছানাকে উপযুক্ত করে তুলতে হবে। 

৩। জব অনুযায়ী টুলস, ইকুইপমেন্ট, ম্যাটেরিয়্যাল বাছাই এবং সংগ্রহ কর। 

৪। তোমার কাজে সহায়তা করার জন্য রোগীকে প্রস্তুত রাখ। 

৫। কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী কাজের স্থানটি পরিষ্কার করে রাখতে হবে। 

৬। ব্যবহৃত জিনিসসমূহ নির্ধারিত বর্জ্য ধারকে ফেলে দিতে হবে। 

৭। কাজ শেষে রেকর্ড শীটে জবের আউটপুট নথিভুক্ত কর।

ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (PPE): প্রয়োজন অনুযায়ী।

প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি/ইকুইপমেন্ট 

১। স্ক্রীন, ২।টিস্যু পেপার, ৩। ডায়াপার, ৪। সাবান, ৫। তোয়ালে, ৬। বালতি, ৭। পাউডার, ৮। রাবার শীট, ৯। এন্টি র্যাশ ক্রীম, ১০। পরিষ্কার কাপড় বা ভিজা ওয়াইপস

কাজের ধারা: 

১। কাজের জন্য উপযুক্ত পিপিই (PPE) পরতে হবে। 

২। নির্দেশিকা অনুযায়ী হাত ধৌত করতে হবে। 

৩। সমস্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ, সরবরাহকৃত সরঞ্জাম সংগ্রহ করে তা প্রস্তুত করতে হবে। 

৪। রোগীর সম্মতি গ্রহণ করুতে হবে। 

৫। গোপনীয়তার সাথে রোগীর শরীর থেকে পুরনো/ ব্যবহৃত ডায়াপার খুলতে সহায়তা করতে হবে। 

৬। ব্যবহৃত ডায়াপার সঠিক নিয়মে নির্ধারিত ময়লা রাখার বিন/ ঝুড়ি/ বর্জ্য ধারকে রাখতে হবে। 

৭। রোগীকে পরিষ্কার করতে হবে। 

৮। এ্যান্টিরাশ ক্রীম ব্যবহার করতে হবে। 

৯। গোপনীয়তার সাথে রোগীকে নতুন ডায়াপার পরতে সহায়তা করতে হবে। 

১০। রোগীকে পূর্বের অবস্থানে স্থানা রিত করতে হবে। 

১১। কর্মক্ষেত্রের নিয়ম অনুসারে সরঞ্জাম ও উপকরণগুলো সুশৃংখলভাবে পরিষ্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। 

১২। হাতের গ্লাভস ও ব্যবহৃত হয়েছে এমন জিনিসগুলো নির্ধারিত বর্জ্য ধারকে ফেলতে হবে। 

১৩। প্রয়োজনীয় তথ্য রেকর্ড চার্টে লিপিবদ্ধ করতে হবে। 

১৪। কর্মক্ষেত্রটি পরিষ্কার করে রাখতে হবে।

কাজের সতর্কতা: 

১। কাজের সময় পিপিই ব্যবহার করতে হবে। 

২। রোগীর সহযোগীতা প্রত্যাশা করতে পুরো পদ্ধতিটি বর্ণনা ও শেয়ার কর 

৩। রোগীকে সরাতে সাহায্য করার সময় নিজের নিরাপদ থাকার ব্যাপারেও গুরুত্ব দিতে হবে। 

৪। ডায়াপার খোলার পড়ে রোগীর বাটোকেকোন র‍্যাশ কিংবা কোনো লালচে ভাব আছে কিনা, তা পরীক্ষা করে নিতে হবে। 

৫। ৬ ঘন্টা পর পর ডায়াপার বদলিয়ে দিতে হবে। তবে এ সময়ের আগে মাঝে মাঝে চেক করতে হবে কোনো প্রসাব অথবা পায়খানা জমে আছে কিনা। 

৬। রোগীকে সাহায্য করার আগে, ঐ বিষয়ে বিজ্ঞান সম্মত নির্দেশাবলি ভালোভাবে রপ্ত করে নিতে হবে। 

৭। কাজ শুরু করার পূর্বে রোগিকে আরামদায়ক অবস্থানে পজিশনিং করে নিতে হবে। 

৮। কাজটি সম্পন্ন করতে সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।

অর্জিত দক্ষতা/ফলাফল : তুমি রোগীর ডায়াপার খোলা ও পড়ানোর প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছ। 

ফলাফল বিশ্লেষণ/মন্তব্য: আশাকরি বাস্তব জীবনে তুমি এর যথাযথ প্রয়োগ করতে পারবে ।

নিম্নে চিত্রের সাহায্যে পুরনো ডায়াপার খোলার ধাপ সমূহ দেওয়া হলো :

নিয়ে চিত্রের সাহায্যে নতুন ডায়াপার পড়ানোর ধাপসমূহ দেওয়া হলো

 

জব ৪: রোগীকে পায়ের যত্নে সহায়তা করা

পারদর্শীতার মানদন্ড : 

১। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) ও নির্ধারিত পোশাক পরিধান করতে হবে। 

২। প্রয়োজন অনুযায়ী রোগীর পা ধোয়ার জন্য আরামদায়ক জায়গা নির্বাচন করতে হবে। 

৩। জব অনুযায়ী টুলস, ইকুইপমেন্ট, ম্যাটেরিয়্যাল বাছাই এবং সংগ্রহ করতে হবে। 

৪। কাজে সহায়তা করার জন্য রোগীকে প্রস্তুত রাখতে হবে। 

৫। পায়ের যন্ত্রের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী কাজের স্থানটি পরিষ্কার করে রাখতে হবে। 

৬। ব্যবহৃত জিনিসসমূহ নির্ধারিত বর্জ্য ধারকে ফেলে দিতে হবে। 

৭। কাজ শেষে রেকর্ড শীটে জবের আউটপুট নথিভুক্ত করতে হবে।

ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (PPE): প্রয়োজন অনুযায়ী। 

প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি/ইকুইপমেন্ট 

১। ফুট ফাইন্সস (Foot Files), ২। কলাস রিমুভার (Callous Removers), ৩। কিউটিকল নিপারস (Cuticle Nippers ), ৪। ফুট স্কাৰ (Foot Scrubs ), ৫। লোশন ( Lotion), ৬। সুতির টাওয়েল (Cotton Towels), ৭। গামলা, ৮। স্পঞ্জ, ৯। সাবান 

কাজের ধারা: 

১। কাজের জন্য উপযুক্ত পিপিই (PPE) পরতে হবে। 

২। আদর্শ নির্দেশিকা অনুযায়ী হাত ধৌত করতে হবে। 

৩। সমস্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ, সরঞ্জাম সংগ্রহ করে তা প্রস্তুত করতে হবে। 

৪। রোগীর সম্মতি গ্রহণ করতে হবে। 

৫। গোপনীয়তার সাথে রোগীর শরীর থেকে পুরনো/ ব্যবহৃত ডায়াপার খুলতে সহায়তা করতে হবে। 

৬। একটি যথার্থ আকারের গামলায় হালকা গরম পানি নিয়ে নিতে হবে। 

৭। রোগীকে ২-৩ মিনিট এই পানিতে পা ডুবিয়ে রাখতে বলতে হবে। 

৮। নখে যদি কোনো ময়লা থাকে তা কলাস রিমুভার দিয়ে উঠিয়ে ফেলতে হবে। 

৯। স্পঞ্জের সাহায্যে সাবান দিয়ে গ্রাহকের পা আলতোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। 

১০। পরিষ্কার পানি দিয়ে পা ধুয়ে দিতে হবে। 

১১। শুকনো তোয়ালে দিয়ে ভালোমতো পা মুছে দিতে হবে। 

১২। পায়ে পর্যাপ্ত লোশন (ময়েশ্চারাইজার) লাগিয়ে দিতে হবে। 

১৩। রোগীকে পূর্বের অবস্থানে স্থানান্তরিত করতে হবে। 

১৪। কর্মক্ষেত্রের নিয়ম অনুসারে সরঞ্জাম ও উপকরণগুলো সুশৃংখলভাবে পরিষ্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।

কাজের সতর্কতা: 

১। কাজের সময় পিপিই ব্যবহার করতে হবে। 

২। রোগীর সহযোগীতে প্রত্যাশা করতে পুরো পদ্ধতিটি বর্ণনা ও শেয়ার নিতে হবে। 

৩। সেবাদানকারী যখন রোগীকে সরাতে সাহায্য করবে, তখন নিজের নিরাপদ থাকার ব্যাপারেও গুরুত্ব দিতে হবে।। 

৪। পায়ে কোনো ইনফেকশন, ক্ষত অথবা ডিসলোকেশন আছে কিনা তা পরীক্ষা করে নিতে হবে। 

৫। রোগীকে সাহায্য করার আগে, ঐ বিষয়ে বিজ্ঞান সম্মত নির্দেশাবলি ভালোভাবে রপ্ত করে নিতে হবে। 

৬।কাজ শুরু করার পূর্বে রোগিকে আরামদায়ক অবস্থানে পজিশনিং করে নিতে হবে। 

৭।কাজটি সম্পন্ন করতে সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।

অর্জিত দক্ষতা/ফলাফল : তুমি পায়ের যত্ন নেয়ার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছ। 

ফলাফল বিশ্লেষণ/মন্তব্য: আশাকরি বাস্তব জীবনে তুমি এর যথাযথ প্রয়োগ করতে পারবে ।

 

 

Content added || updated By

অনুশীলনী

7
7
Please, contribute by adding content to অনুশীলনী.
Content
Promotion